“উদ্বোধনের অপেক্ষায় শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক”

 নির্মাণ কাজ শেষে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক। আগামী ১০ ডিসেম্বর উদ্বোধনের জন্য সময় দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আগামী ১২ ডিসেম্বর সারাদেশে প্রথম বার জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস পালিত হবে। ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবণটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। পার্কটি নির্মিত হয়েছে যশোর শহরের বেজপাড়া নামক এলাকায়। প্রতিটি ফ্লোরে ১৪ হাজার বর্গফুট যায়গায় সহ মোট দুই লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট জায়গা রয়েছে। অনুমান করা যাচ্ছে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলোজি পার্কে প্রায় ১২ হাজার প্রযুক্তিবিদ্বের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। গত ৫ অক্টোবর, ২০১৭ সফটওয়্যার পার্কে চাকুরী মেলা অনুষ্ঠিত হয়, এতে প্রায় ৩০ টি প্রযুক্তি প্রতিষ্টান অংশ গ্রহণ করে।

শুধু অবকাঠামো নয়, পার্কটিতে ইতোমধ্যে ৩৫টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহেই নতুন কিছু প্রতিষ্ঠানকে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটিতে জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ।জায়গা বরাদ্দ পেয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের জায়গার ডেকোরেশন বা সজ্জার কাজও শুরু করেছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, জুনের আগে ১১টি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ আরও ২৪ প্রতিষ্ঠানকে তা বরাদ্দ দেওয়া হলো।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি হাইটেক পার্কটিতে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। অন এয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং সাজ আইটি পার্কটিতে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

টেকনোলজি পার্কের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এই উপ-সচিব এবং প্রকল্প পরিচালক টেকশহরডটকমকে বলেন, পার্কটির ইউটিলিটি সংযোগ কাজ শেষ হয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে নিজেদের অধীনেই একটি ৩৩ কেভিএ পাওয়ার সাব-স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দিতে ফাইবার অপটিক সংযোগ, পানি, সুয়ারেজ লাইনসহ সব ধরনের ইউটিলিটি সংযোগের কাজ শেষ।

শহরের বেজপাড়া এলাকায় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের মোট জায়গার পরিমাণ দুই লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট। প্রতিটি ফ্লোরে ১৪ হাজার বর্গফুটের জায়গা রয়েছে।যেখানে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। আন্তর্জাতিক থ্রি স্টার মানের আবাসন ও জিমনেশিয়ামের সুবিধাসহ ১২তলা বিশিষ্ট ডরমিটরি বিল্ডিং, একটি ক্যান্টিন এবং অ্যাম্ফিথিয়েটার থাকবে পার্কটিতে।

এছাড়াও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য অভ্যন্তরীণ/বহিরাগত বিনোদন সুবিধা, ব্যাংকিং, বীমা, স্বাস্থ্য, কুরিয়ার, ভ্রমণ ইত্যাদি সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান প্রকল্পটির পরিচালক।

‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ নির্মাণ প্রকল্পটি গত ২০১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

বিনামূল্যে জায়গা পাবে স্টার্টআপরা
সফটওয়্যার পার্কটিতে একটি ফ্লোর তরুণ উদ্ভাবক বা উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রেখেছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। বিনামূল্যেই এসব ফ্লোর বরাদ্দ পাবেন তরুণ উদ্ভাবকরা। তবে তাদের বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবার বিল পরিশোধ করতে হবে।

ইতোমধ্যেই ফ্লোরটিতে জায়গা পেতে কয়েকটি স্টার্টআপ আবেদনও করেছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যেসব স্টার্টআপ বিজয়ী হয়েছে তাদেরকেও সেখানে জায়গা দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে স্টার্টআপ বা তরুণ এসব উদ্ভাবকদের জন্য ১৪ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

কর্মসংস্থান হবে ১২ হাজার
পার্কটিতে পুরোদমে কাজ শুরু হলে প্রায় ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, জনপ্রতি যদি ১৫ স্কয়ার ফুট জায়গাও ধরা হয় তাহলেও প্রত্যক্ষভাবে সফটওয়্যার পার্কটিতে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু এর বাইরেও আনুষঙ্গিক আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সবমিলিয়ে প্রায় ১২ হাজারের মতো মানুষ পার্কটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন।

বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৫ প্রতিষ্ঠানকে
ইতোমধ্যে যশোরের ‘শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে’ ৩৫ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।প্রতিষ্ঠানগুলো হলো আমরা হোল্ডিংস লিমিটেড, আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ডেসটিনি, ডব্লিউথ্রি ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, ওয়াটার স্পিড, ই-জেনারেশন, সাজ টেলিকম অ্যান্ড ফ্যাশন, অ্যাপসিস অ্যাডভান্সড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব হ্যাওকস আইটি লিমিটেড, সফটওয়্যার শপ লিমিটেড, অগ্নি সিস্টেম লিমিটেড, মেরোনেট, হাসনাত ইন্টারন্যাশনাল, এফএ আইটি লিমিটেড, মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন লিমিটেড, এস অ্যান্ড এস ইনফর্মেটিক্স, সেবা টেকনোলজিস, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, ইউনিক বিজনেস সিস্টেম লিমিটেড, ডিএলএ আইটি কনসাল্টিং, দোহাটেক নিউ মিডিয়া, ইজি সল্যুশন ২৪, অনএয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড, উৎসব টেকনোলজি লিমিটেড, বর্ণ আইটি, অংশ ইন্টারন্যাশনাল, প্রাইমটেক সল্যুশন, স্বাধীন ডটকম, চাকলাদার ক্রপ, ইনফিনিটি টেকনোলজি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, জেএসআর আইটি, সিসিএ, স্কলারস টেক এবং সিট্রেন্ড সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment