উপকূলে দেশি গরুর চাহিদা বেশি, দামও কম

উপকূলে দেশি গরুর চাহিদা বেশি, দামও কম

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। গত শনিবার (১৭ জুলাই) দুপুর থেকেই হাটে দেশি জাতের গরুর পাশাপাশি ছাগল ও মহিষ বিক্রি হচ্ছে। তবে এ বছর হাটে দেশি গরুর চাহিদা অনেক বেশি। বড় গরুর চাহিদা কম দেখা গেছে। দামের দিক থেকেও গত বছরের তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

এদিকে উপজেলা প্রশাসন করোনাকালে স্বাস্থবিধি মেনে পশুর হাট বসানোর নির্দেশনা দিলেও পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার।

কুয়াকাটাসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন সাপ্তাহিক পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর কোরবানির পশু ও মানুষের ভিড়। বেচা-কেনাও ভালো। বড় বড় গরুর পাশাপাশি ছাগল, মহিষও রয়েছে হাটে। কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউ বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন। কেউ আবার অপেক্ষায় কাঙিক্ষত দামে পশু বিক্রির।

উপজেলা প্রশাসন ও ইজারাদারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনার কথা বলা হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক নেই অনেকের মুখে। মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে  ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেন, গরুর হাটে আবার স্বাস্থ্যবিধি কীসের। মাস্ক পরে গরু কেনা-বেচা হয় না।

কুয়াকাটা পৌরসভা হাটে গরু বিক্রি করতে আসা সানিয়াত (৪০) দক্ষিণের সম্রাট নামে একটি গরু বিক্রি করতে এসেছেন। যার ওজন ১০ মণেরও বেশি। সম্রাটের দাম হাঁকা হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ২ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি দাম বলছেন না। কাঙিক্ষত দাম না বলায় সম্রাটকে ফেরত নিয়ে গেছেন গরুর মালিক সানিয়াত।

কুয়াকাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ মোহাম্মাদ রিয়াজ কালাপাহাড় নামে একটি গরু হাটে নিয়ে এসেছেন। কালা পাহাড়ারের ওজন ৯ মণ। আড়াই লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু ক্রেতারা ১ লাখ ৮০ হাজারের বেশি দাম বলছেন না। কাঙিক্ষত দাম না পাওয়ায় কালা পাহাড়কে ফেরত নিয়ে গেছে।

গরুর মালিক রিয়াজ বলেন, উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করে দেব।

কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সহিদ দেওয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পশু কোরবানি দেবেন। এ জন্য তিনি হাটে ঘুরে লাল রংয়ের দুটি ষাঁড় কিনেছেন। ৭০ হাজার টাকা করে দুটি ষাঁড় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন শহিদ দেওয়ান।

কাউন্সিলর শহিদ দেওয়ান বলেন, গরুর দাম মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই গরু দুটি কিনেছি। পৌর এলাকার দুস্থ ও গরিব মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর নামে গোস্ত ভাগ করে দেব।

ক্রেতা রহিম খান ও সাকিব বলেন, অনেকক্ষণ ঘুরে পছন্দের গরু কিনেছি। চলতি বছর তুলনামূলক গরুর দাম কম।

কুয়াকাটা, মহিপুর, কলাপাড়া উপজেলা শহরসহ সমুদ্র উপকুলীয় এলাকার হাট ঘুরে দেখা গেছে হাটে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির পশু উঠেছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। দাম নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে তেমন একটা অভিযোগ ছিল না। তবে করোনা মহামারির মধ্যেও এ বছর পশু কোরবানি দেওয়ার হার গত বারের চেয়ে বেশি বলে জানান অনেকেই।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, হাটে প্রচুর পরিমাণ পশু এসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠেছে হাট। পৌরসভার গরুর হাটে শতাধিকেরও বেশি গরু কেনা-বেচা হয়েছে। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচা-কেনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি যাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে আসেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন