উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা’র ভুল অপারেশনে ক্ষতির মুখে খামারিরা ; হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের অর্থ !

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা'র ভুল অপারেশনে ক্ষতির মুখে খামারিরা ; হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের অর্থ !
সানজিদা খাতুন,  চুয়াডাঙ্গার প্রতিনিধিঃ
পশু সর্জন না হওয়ার পরও  চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম প্রতিনিয়ত সার্জারী করে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের অর্থ।ফলে তার ভুল চিকিৎসায় অতীতের ন্যায়  আরও একটি গরু মৃত্যুর মুখে রয়েছেন।যেকোনো সময় গরুটি মারা যাবে বলে আশঙ্কা করছে গরুর মালিক দরিদ্র কৃষক।
নিয়মনীতি উপেক্ষা ছাড়া  সার্জন চিকিৎসকের পরিচয়ে   তিনি বড় ধরণের অপারেশন করছেন নিয়মিত,আর এভাবেই তিনি প্রান্তিক প্রর্যায়ের খামারি সহ পশু পালনকারী কৃষকদের ঠকিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছেন।
 সূত্রে  জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে দরিদ্র কৃষক আঃরহমানের একটি লাল রঙের এড়ে গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের স্বরণাপন্ন হয়। নজরুল ইসলাম দরিদ্র কৃষকের বাড়ি গিয়ে গরুটিকে ক্ষতস্থানে অস্ত্রপাচার করতে হবে আর এজন্য খরচ হবে বলে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন। গত আনুমানিক ৩মাস আগে গরুটি সুস্থ হয়ে না উঠলে ওই কর্মকর্তার কাছে যান দরিদ্র কৃষক আঃরহমান। সেসময় দরদাম ঠিক হবার একপর্যায়ে  দরিদ্র কৃষকের বাড়ি গিয়ে গরুটির ক্ষতস্থানে ভুল অস্ত্র পাচার করে ওই কর্মকর্তা। এরপর দিনেদিনে গরুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। ক্ষতস্থানে দগদগে গা দেখা দিয়েছে। গরুটির মালিক বারবার মোবাইলে ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেও গরুটির আর চিকিৎসা দিচ্ছেন না তিনি। গরুটি দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্যাধীক টাকা মূল্যের গরুটি মারা যাবে বলে আশঙ্কা করছে গরুর মালিক।
 এদিকে, সম্প্রতি সময়ে দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা মোড়পাড়ার আনসার আলির ছেলে দিনমজুর আঃকুদ্দুছের একটি ৮মাসের গাভীন গরুর শরীরে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভুল অস্ত্রপাচার করে। গাভীন গরুটির শরীরে অস্ত্রপাচারের দিন রাতে গাভীনটি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অস্ত্রপাচারের স্থান থেকে রক্ত পড়তে থাকে । ভুক্তভোগী আঃকুদ্দুছ বারবার মোবাইল করে ওই কর্মকর্তাকে। বারংবার কল দেয়ার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এর কয়েকদিন পর গাভীন গরুটি মারা যায়। ভুক্তভোগী আঃকুদ্দুছ বাদী হয়ে উপসহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের নামে লিখিত অভিযোগ করে থানা সহ সংশ্লিষ্ট দফতরে।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের উপসহকারী প্রাণী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আমি অনেকদিন আগে পুরাতন বাস্তপুরের আঃরহমানের গরুর অপারেশন করেছি। সেই সময় তাকে বলেছিলাম গরুটি বিক্রি করে দিতে। আর তার কাছ থেকে চিকিৎসা বাবদ, ১ হাজার বা বার শ টাকা নিয়েছি।আপনি অপারেশন করতে পারেন কি জানতে চাওয়া হলে? তিনি তোতা পাখির মতো দম্ভের সাথে বলেন,  আমি মেলা অপারেশন করেছি, হবে তো। চিৎলায় আমার চিকিৎসা দেয়া গরুটি মারা যাওয়ার ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। এখন তাদের গরু যদি ভালো না হয় তাহলে অন্য কারো দিয়ে চিকিৎসা করাক। ওরা মনে করেছে চিৎলার ঘটনায় হেমারিং হয়েছে হয়তো ওরাও অভিযোগ করলে আসমান থেকে একটা গরু চলে আসবে। তবে করুক,রিপোর্ট করিয়ে আসমান থেকে গরু নিয়ে আসুক। দেখি কে কি করে?
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোছাঃ তাসলিমা খাতুন বলেন, অপারেশন তো ওনার করার কথা না। আমাদের তো ভেটেনারি সার্জন নাই হয়তো সেজন্য উনি কিছু চিকিৎসা করে সাপোর্ট দেন। এখন তো অনেকেই শিখে চিকিৎসা দিচ্ছে। সবাইকে তো আর ওভাবে রোধ করা সম্ভব না। তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে এধরণের একটি অভিযোগের পেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। যদি ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্টের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন