কোন আইফোন এখন চলছে বেশি?

গত বছরে বেশ সাড়া জাগিয়ে বাজারে আসে অ্যাপলের আইফোন এক্সআর মডেলটি। আইফোনের অন্যান্য মডেলের চেয়ে নকশার দিক থেকে আলাদা ও দামে কিছুটা কম হওয়ায় নতুন ফোনটি আলোচনায় আসে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, সম্প্রতি আইফোনের সাশ্রয়ী মডেলের আইফোন এক্সআরের বিক্রি কমেছে। তাই এই মডেলটির উৎপাদন ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে অ্যাপল।

বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান মিক্সপ্যানেল বলছে, আইফোন এক্সআরের অবস্থা খুব বেশি খারাপ বলা যাবে না। বিক্রির দিক থেকে আইফোন এক্সআর মডেলটি অ্যাপলের ফ্ল্যাগশিপ মডেল এক্সএসকে ছাড়িয়ে গেছে। আইফোন এক্সএস বাজারে আসার এক মাস পর এক্সআর মডেলে বাজারে ছাড়ে অ্যাপল।

মিক্সপ্যানেলের তথ্য অনুযায়ী, সব আইফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইফোন এক্সআর ব্যবহারকারীর হার ৩ শতাংশের কিছুটা বেশি। এক্সএস মডেল ব্যবহারকারীর হার ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত সপ্তাহে আইফোন এক্সএসকে বিক্রির দিক থেকে ছাড়িয়ে গেছে সাশ্রয়ী এক্সআর মডেল। তবে এক্সএস ম্যাক্সের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত এক্সএস ম্যাক্স ব্যবহারকারী সংখ্যা ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

আইফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মডেলটির নাম আইফোন এক্স। ২০১৮ সালে বাজারে আনা তিনটি মডেলের চেয়ে তার আগের বছর বাজারে আনা ফোনগুলো এখনো বেশি বাজার দখল করে রেখেছে। আইফোন এক্সের দখলে রয়েছে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ আর আইফোন ৮ ও ৮ প্লাসের দখলে রয়েছে যথাক্রমে ৯ দশমিক ৮৭ ও ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।

বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাউন্টার পয়েন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত আইফোন এক্সআরের মডেলটি বিক্রি বেশি হলেও তা ২০১৭ সালে বাজারে আসা আইফোন এক্স মডেলকে ছাড়াতে পারবে না। আইফোন এক্সআরের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি বিক্রি হয়েছে এক্স মডেলটি।

সম্প্রতি ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরোনো আইফোনের চাহিদা এখনো বেশি। আইফোন এক্সআর, আইফোন এক্সএস ও এক্সএস ম্যাক্সের চাহিদা কম। নতুন আইফোন বাজারে আসার পর পুরোনো মডেলের আইফোনের দাম কমিয়েছে অ্যাপল। আইফোন ৭ বিক্রি হচ্ছে ৪৪৯ মার্কিন ডলারে। আইফোন ৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৯৯ মার্কিন ডলারে। ৯৯৯ মার্কিন ডলার দামের আইফোন এক্সএস মডেলের তুলনায় পুরোনো মডেলের আইফোনের দাম কম বলেই অনেকে এদিকে ঝুঁকছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিটি রিসার্চের বিশ্লেষণে আইফোনের চাহিদা কমতে দেখা হেছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের চাহিদা কমবে।

চিটি রিসার্চ জানিয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইফোনের চাহিদার যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, প্রকৃতপক্ষে তা কমে যাবে। ওই সময় পাঁচ কোটি ইউনিটের পরিবর্তে সাড়ে চার কোটি ইউনিট আইফোনের চাহিদা থাকবে। এর মধ্যে সাড়ে ছয় ইঞ্চি মাপের আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের চাহিদা ৪৮ শতাংশ কমবে। আইফোন এক্সএস ম্যাক্স অ্যাপলের সবচেয়ে দামি ফোন। এর দাম শুরু হচ্ছে এক হাজার ৯৯ মার্কিন থেকে। অ্যাপলের তিনটি মডেলের নতুন আইফোনের মধ্যে সবচেয়ে চাহিদা কম আইফোন এক্সআরের। অ্যাপল এ মডেলের আইফোনের উৎপাদন এক-তৃতীয়াংশ কমিয়েছে। গত অক্টোবর মাস থেকে এই মডেলের আইফোন বিক্রি শুরু করে অ্যাপল। সেপ্টেম্বর থেকে বিক্রি শুরু হয় আইফোন এক্সএস ও আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের চোখে ২০১৮ সালে বাজারে আসা নতুন তিনটি মডেলের আইফোনে তেমন নতুনত্ব নেই। এর নকশা গত বছরে বাজারে আনা আইফোন এক্সের মতো। তবে এতে বিভিন্ন ফিচারের কারণে দামে পার্থক্য এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ৬৪ জিবি আইফোন এক্সআরের দাম ৭৪৯ মার্কিন ডলার। ১২৮ জিবি ও ২৫৬ জিবি এক্সআর কিনতে যুক্তরাষ্ট্রে খরচ হবে যথাক্রমে ৭৯৯ ডলার আর ৮৯৯ ডলার। আইফোন এক্সএসের দাম শুরু ৯৯৯ মার্কিন ডলার থেকে। সাড়ে ছয় ইঞ্চি মাপের আইফোন এক্সএস ম্যাক্সের দাম ১ হাজার ৯৯ মার্কিন ডলার থেকে শুরু।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment