কোরবানির গোশত বিতরণের নিয়ম

কোরবানির গোশত বিতরণের নিয়ম

কোরবানির গোশত সামাজিকভাবে বণ্টন করা হয়। এতে ধনী-গরিব, পাড়া-প্রতিবেশি ও আত্মীয় সবাই অন্তর্ভুক্ত। গোশত বণ্টনের এই রেওয়াজ ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য। ইসলামের শুরু থেকেই এমনটা হয়ে আসছে।

কেউ একাকী কোরবানি করলে, তার কোরবানির গোশত বণ্টনে কোনো বেগ পেতে হয় না। তিনি ইচ্ছেমতো কাউকে দিতে পারেন অথবা নিজে খেতে পারেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেন, ‘তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং দান-খয়রাত করো।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৬৯; মুসলিম, হাদিস : ১৯৭২; সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৪৪২৬; মুআত্তা মালিক, হাদিস : ২১৩৫)

 

কিন্তু যখন শরিকে কোরবানি করা হয়, তখন ঠিকভাবে গোশত বণ্টনের বিষয়টি সামনে আসে। তাই গোশত বিতরণের নিয়ম ও মাসআলা জেনে রাখা জরুরি—

কোরবানির গোশত যেভাবে বিতরণ উত্তম

কোরবানির মাংসের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো মাংস যদি নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ি : ৪/২২৪; আলমগিরি : ৫/৩০০)

‘শরিকে (শরিক হিসেবে) কোরবানি করলে, ওজন করে মাংস বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নয়। (আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৩১৭; ফাতাওয়া কাজিখান : ৩/৩৫১)

কোরবানির গোশত তিন ভাগ করতেই হয়?

বড় পশুর কোরবানিতে সাতভাগের মাঝে এক বা একাধিক ভাগ অলিমার (বিবাহোত্তর আয়োজন) জন্য রেখে কোরবানি করা হলে— অলিমার সেই অংশের বা ভাগের কোরবানির গোশের অংশের মতোই বণ্টন করতে হবে কিনা? যেমন- তিনভাগ করে একভাগ নিজের জন্য, একভাগ নিজের আত্মীয়স্বজনদের জন্য ও একভাগ গরিব-মিসকিনদের জন্য। এমন প্রশ্ন অনেকে করে থাকেন।

তাদের প্রশ্নের উত্তর হলো- এটি জরুরি নয়। আর কোরবানির গোশতও তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আত্মীয় ও এক ভাগ গরিবকে দেয়া বাধ্যতামূলক নয়; বরং এটা মুস্তাহাব। (রাদ্দুল মুহতার : ০৯/৪৭৪; বাদায়িউস সানায়ি : ০৪/২২৪; আল-ফাতাওয়া আস-সিরাজিয়্যাহ : ৩৮৯)

ভাগে কোরবানিতে যেভাবে বণ্টন করত হয়

কোরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশিকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়িউস সানায়ি : ৪/২২৪; আলমগিরি : ৫/৩০০)

সাতজনে মিলে কোরবানি করলে— সবার অংশ সমান হতে হবে। কারও অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন : কারও আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে— কোনো শরিকের কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। (বাদায়িউস সানায়ি : ৪/২০৭)

প্রসঙ্গত, কোরবানির গোশত তিনদিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয। (বাদায়িউস সানায়ি : ৪/২২৪; সহিহ মুসলিম : ২/১৫৯; মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ১/৩১৮; ইলাউস সুনান, হাদিস : ১৭/২৭০)

আপনি আরও পড়তে পারেন