নবাবঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা : মো. সাদের হোসেন বুলু
স্থানী পর্যায়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীয়করণ এবং স্থানীয় সরকারসমূহকে দক্ষ ও শক্তিশালী করার মাধ্যমে জনগণের জন্য অধিকরত সেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশের ন্যায় ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতি ও অবহেলায় নির্মিত ভবনটি এখন গরুর গোয়ালঘর ও মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসীর।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ভবনটি ব্যবহার না করাও তাদের অবহেলার কারনে ইউপি ভবনটি আজ গরু,ছাগলের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। ইউনিয়নবাসী তাদের বহুল প্রত্যাশিত একই স্থানে সকল সেবা দীর্ঘ ধরে বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৬ এপ্রিল ২০১৩ সালে তৎকালিন দোহারও নবাবগঞ্জের সাংসদ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খাঁন ভবনটির নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন। যথা সময়ে নির্মান কাজ শেষ হলেও ইউপি চেয়াম্যান শ্রী নন্দলাল সিং ও তার পরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা উক্ত ভবনে কোন কার্যক্রম পরিচালনা করেন না। যন্ত্রাইল ইউপির আজিজপুর গ্রামের বাসিন্দা হায়াত আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন গুলোর মাধ্যমে প্রান্তিক জনগনের মাঝে ই-সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে আধুনিক ও মান সম্মত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন তৈরী করেছে বর্তমান সরকার। আমাদের ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা কেন প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবনটি ব্যবহার করছেন না, বিষয় টি আমার বোধগোম্য নয়।
সরেজমিন ঘুরে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে আলাপ করে জানা যায়, নতুন ইউপি ভবনটি নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের গাফিলতি, অবহেলার ফলে আজ নেশাগ্রস্থ যুবকদের আখড়া ও গরুর গোয়াল ঘরে পরিনত হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন কক্ষের সামনে ভিতরে গো- ছাগলের বিষ্টার পাশাপাশি দেওয়ালগুলিতে রয়েছে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ন দেওয়াল লিখন। জাতীয় ও বিশেষ দিন গুলোতে ভবনটিতে কখনো উড়েনি জাতীয় পতাকা। অধিকাংশ জনগনই জানেন না কি কারনে ইউপি ভবনটি সচল হচ্ছে না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর, যোগাযোগের সমস্যার কথা বলে ইউপি চেয়ারম্যান নন্দলাল সিং এখানে বসতে চাননা। ফলে বিভিন্ন আধুনি ও ডিজিটাল ই-সেবা থেকে বঞ্চিত তারা। নবগ্রামের বাসিন্দা সজল জানান, শুনেছি চেয়াম্যান নতুন ভবনে বসেন না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত আমরা সাধারণ মানুষ কি করবো। যেহেতু ইউনিয়নবাসীর কল্যাণের লক্ষ্যে সরকার ভবন নির্মান করেছে, সেহেতু জনপ্রতিনিধিদের ব্যবহার করা উচিত।
যন্ত্রাইল ইউপি চেয়াম্যান শ্রী নন্দলাল সিং বলেন, সপ্তাহে শুক্রবার বসি। কিন্তু শুক্রবার ইউনিয়ন ভবনে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার রুমে তালা দেয়া ছিলো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয় টি আমি জানতে পেরেছি। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা ভবনটি ব্যবহার করেন না। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান (সার্বিক) বলেন, বিষয় টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হবে। ছবির ক্যাপঃ অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এখন গরু,ছাগলের চারণভূমি ও মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।