ঘাটাইলে বেহাল দশা চারটি আশ্রয়ণে দুই বছরেও মিলেনি সংস্কার

ঘাটাইলে বেহাল দশা চারটি আশ্রয়ণে দুই বছরেও মিলেনি সংস্কার
সৈয়দ মিঠুন ঘাটাইল টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: বেহাল দশা ঘাটাইলের চারটি আশ্রয়ণে দুই বছরেও মিলেনি সংস্কার টিনের ঘরের চালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়। বড় বড় ফুটায় ব্যবহার করা হয়েছে ছেঁড়া কাঁথা ও পলিথিন। মানে, টিনের চালার ওপর কাঁথা ও পলিথিনের ছাউনি। মরিচা পড়ে টিন আর আস্ত নেই। সামান্য বৃষ্টিতে উঠান ভেজার আগেই ভিজে যায় ঘর। নির্মাণের পর আর মেরামত করা হয়নি। এমন বেহাল দশা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চারটি পুরোনো আশ্রয়ণ প্রকল্পের। কর্তৃপক্ষ বলছে, বছর দুয়েক আগে মেরামত-সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত করে ওপরে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলার পুরোনো চারটি আশ্রয়ণ প্রকল্প হলো- পাঁচটিকড়ী, দেওপাড়া, কাজলা ও লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সানবান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্প। নির্মাণের পর অদ্যাবধি কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। এর মধ্যে একেবারেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সানবান্দ আশ্রয়ণ।
সানবান্দ আশ্রয়ণের ছবি তুলতে গেলে তেড়ে আসেন মর্জিনা বেগম নামে এক বাসিন্দা। বাধা দেন ছবি তুলতে।
পরিচয় জানার পর ক্ষোভ নিয়ে বলতে থাকেন, ‘মেলা মানুষ আহে এইহানে, ফটো তুলে, যাওয়ার বেলা কইয়া যায় কাম আইবো, আমাগো ঘরের কিছুই অয় না। ঘরে কারেন্ট নাই, আমাগো সোলার দিছাল, তাও নষ্ট হইয়া গেছে। আইতে অন্ধকারে থাহন লাগে।’
আশ্রয়ণটির বয়স প্রায় ১৭ বছর। মোট ঘর রয়েছে ৬০টি। এমন দশায় অনেকেই চলে গেছেন। যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই, তাদের মতো এখনও বাস ২৬টি পরিবারের।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা বৃদ্ধা খোদেজা বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে কি রাত কি দিন পলিথিনের কাগজ মোড়ায় দিয়া খেতা-কাপড় টোপলা বাইন্দা নিয়া বইয়া থাকি।’ বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে যাওয়া নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে উঠান ভিজার আগেই ঘর ভিজা যায়। চালে পলিথিন আর খেতা দিয়া পানি ফিরাবার চেষ্টা করি, তাও ভিজা যায়।’
লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সদস্য বাহাদুর মিয়া জানান, শুধু ঘর দিয়েই পানি পড়ে না, তাদের টয়লেট নেই, সোলার প্রায় সবগুলোই নষ্ট, টিউবওয়েলও নেই। অন্য জায়গা থেকে পানি এনে পান করতে হয়। উপজেলায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় একই অবস্থা উপজেলার আরও তিনটি পুরোনো আশ্রয়ণ প্রকল্পের।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চারটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মেরামত-সংস্কার নিমিত্ত এলজিইডি কর্তৃক প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওপরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, পরিদর্শন করে সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রায় দুই বছর আগে প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এটি পাস হয়ে এলে সংস্কার করা হবে।
ইউএনও মো. সোহাগ হোসেন বলেন, উপজেলায় সদ্য যোগদান করেছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করব। স্থানীয়ভাবে যেগুলোর সমাধান করা সম্ভব, তা করা হবে। আগের নথিগুলো দেখে এ বিষয়ে কথা বলব

আপনি আরও পড়তে পারেন