চট্টগ্রামকে শেষ চারে নিয়ে গেলেন ‘খুনে’ জ্যাকস, অপেক্ষা বাড়ল ঢাকার

চট্টগ্রামকে শেষ চারে নিয়ে গেলেন ‘খুনে’ জ্যাকস, অপেক্ষা বাড়ল ঢাকার

বাংলাদেশ ক্রিকেট সমর্থকদের বড় একটি অংশের মন খারাপ ভীষণ! ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মেগা নিলামে দল পাননি সাকিব আল হাসান। অথচ টাইগার ক্রিকেট সমর্থকদের চোখ ছিল নিলামে, ঠিক কত টাকায় কোন দলে যাচ্ছেন সাকিব। আপাতত অপেক্ষার পালা বাড়ছে। নিলামের শেষ অংশে যদি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ প্রকাশ করে সাকিবকে নিতে, তবেই মিলবে সুযোগ। এমন মুহূর্তে অবশ্য মন ভালো করার খবর আছে চট্টগ্রামের ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য। সিলেটকে হারিয়ে যে তাদের দল চলে গেছে প্লে অফে!

জিতলেই প্লে-অফ, হারলে ধর‍তে হবে বাড়ির পথ। এমন সমীকরণ নিয়ে সব হারানো সিলেট সানরাইজার্সের মুখোমুখি হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। যেখানে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৮৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাড় করে সিলেট। ১৮৬ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে ওপেনার উইল জ্যাকসের ঝোড়ো ফিফটিতে ৪ উইকেট ও ৫ বল হাতে রেখে জয় পেয়েছে চট্টগ্রাম। এ জয়ের ফলে ঢাকাকে অপেক্ষায় রেখে এলিমিনেটরের টিকিট পেল চট্টগ্রাম। দিনের অপর ম্যাচে কুমিল্লা যদি খুলনাকে হারায়, তবেই প্লে-অফে জায়গা হবে ঢাকার।

মিরপুরে ১৮৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। ওপেনার জাকির হাসান হাত খুলে খেলতে গিয়ে ফেরেন ৯ বলে ১৭ করে। অধিনায়ক আফিফ হোসেনকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে চট্টগ্রাম শিবিরে বড়সড় ধাক্কা দেন সোহাগ গাজি। ৭ বলে ৭ রান করেন আফিফ। এরপর জ্যাকস-ওয়ালটন জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় চট্টগ্রাম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪১ বল খেলে ৬৯ রান যোগ করেন দুজন। ৩ চার আর ২ ছয়ে ২৩ বলে ৩৫ রান করেন ওয়ালটন।

অন্যপ্রান্তে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন জ্যাকস। মাত্র ৩৫ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। তবে দলটির আরেক বিদেশি রিক্রুট বেনি হাওয়েল আজ একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি। ৮ বলে ৮ রান করে ফেরেন সাজঘরে। হাওয়েলের আউটের পর ক্রিজে এসে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন শামীম হোসেন। শেষদিকে জ্যাকস-শামীমের দুর্দান্ত ব্যাটিং প্লে-অফের পথ সুগম করে দেয় চট্টগ্রামের।

যদিও ক্রিজে থেকে দলের জয়ের সাক্ষী হতে পারেননি শামীম। ৭ বলে ২১ রানে আউট হন জয়ের জন্য ১৫ রান বাকি থাকতে। যেখানে ৩টি চার ও ১টি ছয় মারেন এই তরুণ। পরে মেহেদী হাসান মিরাজ ২ রান করে ফিরলেও জ্যাকসের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বেগ পেতে হয়নি চট্টগ্রামকে। ৫৭ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছয়ে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার এই দুর্দান্ত ইনিংসে চেপে ৪ উইকেটের জয় পায় চট্টগ্রাম। এর ম্যাচ হারের ফলে ১০ ম্যাচে মাত্র ১ জয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করল সিলেট।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনি জুটিতে ভালো শুরু পায় সিলেট। কলিন ইনগ্রাম ও এনামুল হক বিজয় যোগ করেন ৪১ রান। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ২৪ রান করে ইনগ্রাম আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ১৯ বলের ইনিংসটি এই দক্ষিণ আফ্রিকান সাজান ১টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে। আবার একাদশে সুযোগ পেয়ে মিজানুর রহমান এদিনও রানের খাতা খুলতে পারেননি।

৪৬ রানে দুই উইকেট হারানো দলটির হাল ধরেন বিজয় আর লেন্ডন সিমন্স। তৃতীয় উইকেটে দুজন গড়েন ৫৪ রানের পার্টনারশিপ। ৩৮ বলের এই জুটির কল্যাণে বড় রানের ভিত পায় সিলেট। পরে ২ রানের ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যানকেই প্যাভিলিয়নে ফেরান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। মিজানুরকে আউট করা মৃত্যুঞ্জয় সিমন্সকে বানান নিজের দ্বিতীয় শিকার, বিজয়কে তৃতীয়। ৩ চার ১ ছয়ে বিজয় ২৬ বলে ৩২ ও সিমন্স ৫ চার আর ২ ছয়ে করেন ২৭ বলে ৪৩ রান।

তাদের বিদায়ের পর ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেন অধিনায়ক রবি বোপারা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২১ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৪ রান করেন বোপারা। মোসাদ্দেক ২২ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ৩টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে। এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে সিলেটের পুঁজি দাঁড়ায় ১৮৫ রান। চট্টগ্রামের পক্ষে ৩ উইকেট নেন টুর্নামেন্টজুড়ে ধারাবাহিক বল করা মৃত্যুঞ্জয়।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন