চাঁদে ১ লাখ নতুন গহ্বর

চাঁদে ১ লাখ নতুন গহ্বর

চাঁদের পৃষ্ঠে ১ লাখ ১০ হাজার নতুন গহ্বরের অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে নেচার কমিউনিকেশন্স জার্নালে। গবেষণাপত্রটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে বিজ্ঞানীমহলে।

চাঁদের বুকের এসব গহ্বর এতদিন বিজ্ঞানীদের নজরে পড়েনি। কিন্তু এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির কল্যাণে এমন সাফল্যে সম্ভব হলো। চিনের পাঠানো লুনার অরবিটারের সংগৃহীত তথ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশেষ অ্যালগরিদমের মাধ্যমে বিশ্লেষণ জানা গেল আরো ১ লাখ ১০ হাজার নতুন গহ্বরের অস্তিত্ব।

এর আগে চাঁদের বুকে গহ্বর আবিষ্কারের সবচেয়ে বড় পরিমাণ ছিল ৯,১৩৭টি, যেটিকে ১৯১৯ সালে স্বীকৃতি দেয় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন। এবারের আবিষ্কার অতীতের সব আবিষ্কারকে ছাড়িয়ে গেছে।

নতুন এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন চীনের জিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্সেস এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর চেন ইয়াং। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত গহ্বরগুলো মূলত চাঁদের নিম্ন ও মধ্য অক্ষাংশের অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সময়ে উল্কার সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে এই গহ্বরগুলো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গহ্বরগুলোর ব্যাস ১ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে এতদিন এগুলো সাধারণ পর্যবেক্ষণে নজরে পড়েনি। ধরে নেওয়া হয়েছিল তা চাঁদের ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক গঠন। 

তবে এর বাইরেও অনিয়মিত আকারের বৃহদায়তন গহ্বরেরও সন্ধান দিয়েছে চিনের লুনার অরবিটার চ্যাং–১ এবং চ্যাং-২। যার ব্যাস ৫৫০ কিলোমিটার। অনুমান করা হচ্ছে, এ ধরনের গহ্বরের সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার। 

প্রফেসর ইয়াং এর মতে, এই গহ্বরগুলো অনেকটা ‘জীবাশ্ম’-এর মতোই। এগুলোর মধ্যেই সংরক্ষিত রয়েছে চাঁদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। গহ্বরগুলোর কিছু কিছুর বয়স ৪০০ কোটি বছর পর্যন্ত। ফলে চাঁদের বিবর্তনের সম্পূর্ণ ইতিহাস সম্পর্কে সমস্ত তথ্যই পাওয়া সম্ভব হতে পারে সেখান থেকে।

অবশ্য গবেষক দলটি কেবল এতেই সীমাবদ্ধ থাকতে রাজি নন। চাঁদ থেকে নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফেরা চীনের লুনার অরবিটার চ্যাং-৫ এর ডেটা বিশ্লেষণেও এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগরিদম কাজ লাগাতে যাচ্ছেন তারা। এজন্য অ্যালগরিদমে কিছু পরিবর্তন আনছেন গবেষকরা। যা চ্যাং-৫ এর তথ্য থেকে চাঁদের গহ্বর শনাক্তকরণে আরও নিখুঁতভাবে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের।

আপনি আরও পড়তে পারেন