চাল মজুত হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি

চাল মজুত হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি

মিলাররা গোপন জায়গায় অবৈধভাবে চাল মজুত করছেন কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

সোমবার (১৬ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘২০ হাজার মিলে সিন্ডিকেট করা সম্ভব কি? তবে হ্যাঁ, এদের মধ্যে কেউ কেউ আছে, অধিক অর্থ আছে, তারা মিলে মজুতের চেষ্টা করে। মিলে মজুত না করে গোপন কোনো জায়গায় মজুত করে কি না, সেটি আমরা মনিটরিং করার চেষ্টা করছি, গোয়েন্দা সংস্থাকে চিঠি দিয়েছি। অনেক বড়-বড় কোম্পানি আছে, বাজার থেকে চাল তুলে নিয়ে প্যাকেটজাত করছে। এতে সরু চালের ওপর প্রভাব পড়ছে।’

চাল আমদানিতে ট্যাক্স সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে ধানের দাম অনেক কমে যাওয়ায় এই ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল। কৃষকদের বাঁচাতে এই  ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল। তখন ধান রফতানির মতো অবস্থাও ছিল না। ফলে কৃষকরা কম মূল্য পেত। তারা ধান উৎপাদন না করে জমি কেটে চিংড়ি ঘের, পুকুর, ফল ও সবজির বাগান করছিল। তখন যাতে চাল আমদানি না হয়, সেজন্য এই ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছিল।’

এসময় ব্যবসায়ীদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সুযোগ নেয়। ২০১৮ সালের মজুত দিয়ে করোনা মহামারি ভালোমতো মোকাবিলা করেছি। গতবার বোরো মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে আবাদ কম হয়, আমাদের মজুতও কমে যায়। ফলে চাল আমদানি করে মজুত ঠিক রাখতে হয়। আমন ধানও চাহিদামতো মজুত করা যায়নি।’

এবার উৎপাদন আরও বেড়েছে। এই সময়ে চালের দাম আরও কম থাকার কথা। কেন বাড়ছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। এখন ১৪ লাখ টন চাল মজুত আছে। সারাদেশে বিশেষ ওএমএস দেওয়া হচ্ছে। চাল আনতে বিধিনিষেধের মধ্যে ট্রাকের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে বলে আড়তদাররা বলেছেন, যোগ করেন মন্ত্রী।

মিলাররা আগে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার পাঁচগুণ মজুত করতে পারলেও তা কমিয়ে তিনগুণ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এই তিনগুণের এক অংশ বাজারে যাবে, এক অংশ মিলে থাকবে, আরেক অংশ মজুত থাকবে। এতে হিউজ স্টক করার স্কোপ নেই। আমরা লক্ষ্য করছি ব্যবসায়ীরাও কিন্তু এবার অনেক স্টক করছেন, ফরিয়ারা তো রয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন মজুতের তদারকি করছে। এরপরেও মজুত রেখে যাতে দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য বেসরকারিভাবে আমদানির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখেছিলাম, তিনি অনুমোদন দিয়েছেন। এনবিআর এসআরও জারি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা চাল আমদানি করতে চান তাদের আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে আবেদন করতে বলেছি, তাদের আবেদন দেখে সক্ষমতা অনুযায়ী আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে। আমি আশা করি, আমদানির চাল কিছুটা এসে ঢুকলেও তখন এর প্রভাব পড়বে এবং যারা ধান বা চাল মজুত করে রেখেছে, তারা সেগুলো বাজারে ছেড়ে দেবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন