ডিজিটাল মহাজন ‘র‌্যাপিড ক্যাশে’র ফাঁদে অসংখ্য গ্রাহক

ঋণ দেবে ২০০০ টাকা। ৭ দিন পর ফেরত দিতে হবে ২০০৫ টাকা। মাত্র ৫ টাকা সুদ দিতে হবে জেনে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করেছেন ‘র‌্যাপিড ক্যাশ’ নামে একটি অনলাইন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের অ্যাপে। নিবন্ধনকারীদের অধিকাংশই আবেদন করছেন সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা ঋণের জন্য।

তবে মোবাইলে টাকা জমা হওয়ার বার্তা আসার পরেই চিন্তা শুরু হয় গ্রাহকের। ২০০০ টাকার পরিবর্তে টাকা আসে ১৬৮৫। ৭ দিনের মধ্যে ১৬৮৫ টাকার বিপরীতে জমা দিতে হবে ২০০৫ টাকা। না দিতে পারলে সুদ প্রতিদিন ১০০ টাকা। এক মাস পর থেকে সুদ প্রতিদিন ২০০ টাকা। এরপর এক সপ্তাহ পর থেকে সুদ ৪০০ টাকা।
সম্পূর্ণ মহাজনি প্রথার এ প্রক্রিয়ায় এরই মধ্যে অসংখ্য গ্রাহককে পথে বসিয়েছে এ যুগের ডিজিটাল মহাজন ‘র‌্যাপিড ক্যাশ’।

কথিত এই ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ‘র‌্যাপিড ক্যাশ’ নিজেদের মাইক্রো ফিন্যান্সিয়াল অ্যাপ বলে দাবি করেছে ডিজিটাল মাধ্যমে। গুগল প্লে স্টোর থেকে তাদের অ্যাপ ডাউনলোড করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলে ৭ দিনের জন্য ২০০০ টাকা (সর্বনিম্ন) ঋণের আবেদন করা যায়। এক সপ্তাহে ২০০৫ টাকা পরিশোধের পর ধাপে ধাপে ঋণের সীমা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা (৩ মাসে পরিশোধ শর্তে) পর্যন্ত যায়।

নিজেদের কোনো অফিস বা ঠিকানা না থাকলেও র‌্যাপিড ক্যাশ আবেদনের সময় একজন গ্রাহকের এনআইডি, ছবি, বর্তমান ঠিকানা, দুজন জিম্মাদারের বিস্তারিত তথ্য, অফিসের নাম, পদ, ঠিকানা, ফোন নম্বরসহ বহু তথ্য নিয়ে নেয়। এছাড়া অ্যাপটি ইনস্টল করলে একজন গ্রাহকের মোবাইলের কন্টাক্ট লিস্ট ও ছবির গ্যালারির অ্যাক্সেস নিয়ে নেয় র‌্যাাপিড ক্যাশ।

জানা গেছে, ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় র‌্যাপিড ক্যাশের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে গ্রাহকের কখনো দেখা হয় না। র‌্যাপিড ক্যাশ থেকে অনলাইনে ঋণের টাকা চলে আসে গ্রাহকের বিকাশ, নগদ কিংবা রকেট অ্যাকাউন্টে। তবে একজন গ্রাহককে ২ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে দেওয়া হয় ১৬৮৫ টাকা। কেটে রাখা হয় ৩১৫ টাকা।

আবেদন প্রক্রিয়াকরণ ফির নামে ১২০ টাকা, ডাটা অ্যানালাইসিস চার্জ হিসেবে ১৮০ টাকা এবং ভ্যাট চার্জ হিসেবে ১৫ টাকা কেটে রাখে তারা। গ্রাহককে ফেরত দিতে হয় ২০০৫ টাকা। যদিও ঋণ নেওয়ার আগে টাকা কাটার বিষয়ে কোনো তথ্য গ্রাহককে জানানো হয় না। মাত্র ৫ টাকা সুদে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের প্রাচীন মহাজনি প্রথার ফাঁদে ফেলে দিচ্ছে ঠিকানাবিহীন এই প্রতিষ্ঠান।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন