‘ডিমপাহাড়’ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে

‘ডিমপাহাড়’ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে

বশির আহমেদ,বান্দরবান প্রতিনিধি:
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচু বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তবে ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথের মাঝখানে থাকা ‘ডিমপহাড়’ এলাকাটি পর্যটকদের বেশি নজর কাড়ছে।
জেলার থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা জানান, দেশের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের ওপর থানচি-আলীকদম সড়কের মাঝপথে অবস্থিত ডিমপাহাড় এলাকাটি জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে শুরু করেছে । কারণ পুরো ৩৩ কিলোমিটার সড়কপথ জুড়েই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি। রকমারী ফুল-ফলে আচ্ছাদিত সবুজ গাছ-গাছালিতে ঠাঁসা এই সড়ক পথ। পিচঢালাই আঁকা-বাঁকা পথে এসব দৃশ্য দেখে ভ্রমণপিপাসুরা মনের ভেতর স্পন্দন খুঁজে পান।

পুরো সড়কপথের সাথে যোগ হয়েছে সবুজপাহাড় আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছোট-ছোট পাড়া, গ্রামগুলোর বৈচিত্র্যময় মানুষের জীবনধারা ও পথচলা। তবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এখনও বিপদমুক্ত নয়, এমন এলাকাসমূহে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা চৌকি কিংবা নিরাপত্তা ক্যাম্প বসানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

বগুড়া থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক আবদুল হালিম, রফিক উদ্দিন এবং মমতাজ খানম জানান, তারা ৩ দিন আগে আলীকদম হয়ে থানচি উপজেলা সদরের সড়কপথ ভ্রমণ করেছেন এবং সেখানে তারা ডিমপাহাড় নামক স্থানে বিশ্রাম করে বেশ আনন্দ উপভোগ করেছেন। তারা আরো জানান, কেবল ডিমপাহাড় এলাকাটিই নয়, ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ থানচি-আলীকদম উপজেলা সড়কের প্রতি ১০ কিলোমিটার পর পর একটি করে পথিক বা পর্যটকদের জন্যে অস্থায়ী বিশ্রামাগারসহ নিরাপত্তা চৌকি নির্মাণ করা আবশ্যক। এসব নির্মিত হলে ভ্রমণপিপাসুরা এ সড়ক ব্যবহারে আরও আগ্রহ এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বলে তারা জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা পর্যটকদের নিরাপত্তা বিষয়ে জানান, জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কের পাশে পৃথকস্থানে স্থাপিত নিরাপত্তা চৌকিসমুহে যাতায়াতকারী পর্যটকসহ যাত্রীবহনকারী যানবাহনগুলোর চালক এবং যাত্রীদের জরুরি মোবাইল নাম্বাসহ ডাটা লিপিবদ্ধ করা হয়। যাতে করে যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। যাতে পর্যটকরা সমস্যায় না পড়েন তার জন্য গাইডের ব্যবস্থাও রয়েছে।

যেভাবে যেপথে আলীকদম-থানচি সড়ক ব্যবহার করবেন:

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের চকরিয়া বাসস্টেশন থেকে আলীকদমমুখি বাস কিংবা ছোট যানবাহনে আলীকদম উপজেলা সদরে যাবেন। সেখান থেকে হালকা যানবাহনে সহজেই যাওয়া যায় ‘ডিমপাহাড় এলাকা’। আবার বান্দরবান জেলা সদর হয়ে থানচি উপজেলা সদর থেকে যেকোন হালকা যানবাহন চেপেই দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্রমণ করা যায় ওই সড়কপথে। তবে প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা হিসেবে পাহাড়ে যানবাহন চালাতে দক্ষ এমন চালককেই সাথে আনা আবশ্যক।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা সদর থেকে আলীকদম-থানচি সড়কপথে যাবার সময় লামা উপজেলার টপহিল মিরিন্জা পর্যটন কেন্দ্র এবং আলীকদম উপজেলা সদরের কাছে পর্যটন কেন্দ্র আলী ছড়ংগ দর্শনের সুযোগ পাবেন। জেলা সদর হয়ে থানচি-আলীকদম সড়কপথ ভ্রমণে গেলে দর্শনীয় স্থান প্রান্তিক লেক, নীলাচল, রাজবাড়ি, শৈলপ্রভাত, চিম্বুক পাহাড়, জিয়া পুকুর, সুভ্রনীলা, নিলগিরি এবং জীবননগর অবলোকনের সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যটকদের ভ্রমণ মৌসুম না হওয়া সত্বেও প্রতিদিনই বিশেষ করে শুক্রবার-শনিবারসহ সরকারি বন্ধের দিন বিপুল পর্যটকের সমাগম ঘটছে বান্দরবানে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment