ডেঙ্গুতে কাবু ঢাকাবাসী, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গোড়ান-বাসাবো

ডেঙ্গুতে কাবু ঢাকাবাসী, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গোড়ান-বাসাবো

ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে রাজধানীতে জরিপ চালিয়ে এইডিস মশার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে গোড়ান ও বাসাবো এলাকায়। কোনো এলাকায় এইডিস মশার ঘনত্ব পরিমাপের একক ব্রুটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি হলেই তাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবো ও গোড়ান এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৭৩ দশমিক ৩। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এইডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ২৯ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১০ দিন ধরে জরিপ চলে। রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এইডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপব্যবস্থাপক ডা. আফসানা আলমগীর খান।

চলতি আগস্ট মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৮৩ জন। যা আগের সাত মাসের মোট রোগীর দ্বিগুণেরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯১ জন। তার মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫৯ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২ জন। ঢাকা শিশু হাসপাতালে শুক্রবার ৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল। চলতি বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে জুলাই মাসে ১২ জন আর চলতি মাসে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ডের ১৯টি এলাকার ব্রুটো ইনডেক্স ৪০ এর বেশি পাওয়া গেছে। দুই সিটি করপোরেশনের ৫৬টি এলাকায় ব্রুটো ইনডেক্স ছিল ২০ বা তার বেশি। জরিপের তথ্যে দেখা গেছে, ব্রুটো ইনডেক্স ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ৬৬ দশমিক ৭, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আরকে মিশন রোড ও টিকাটুলিতে ৫০, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বনশ্রীতে ৪০ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিন্টো রোড ও বেইলি রোডে ৪০। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ৫৬ দশমিক ৭ পাওয়া গেছে। এই ওয়ার্ডে রয়েছে মগবাজার, নিউ ইস্কাটন এলাকা। এছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও নিকুঞ্জ নিয়ে গড়া ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রুটো ইনডেক্স ৪৮ দশমিক ৪, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর ও দারুস সালাম এলাকায় ৪৬ দশমিক ৭, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়ায় ৪৩ দশমিক ৩ এবং মহাখালী ও নিকেতন এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০। উত্তর সিটি করপোরেশনের আফতাবনগর ও মেরুল বাড্ডা এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বংশালের ব্রুটো ইনডেক্স শূন্য পাওয়া গেছে জরিপে, অর্থাৎ এসব এলাকায় মশার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের ১০০টি স্থানে জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৪১টি এবং দক্ষিণের ৫৯টি। জরিপের সময় এসব এলাকার ৩ হাজারটি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। ২ হাজার ৪১২টি বাড়ি ও স্থাপনায় এইডিস মশা পাওয়া যায়নি। ৫৮৮টি স্থানে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মোট পরিদর্শন করা বাড়ির ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশে এইডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। জরিপে যতগুলো বাড়ি পরিদর্শন করে মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে শতকরা ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বাড়ির মধ্যে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন