ত্বীনফল চাষ করে স্ব্প্ন ভঙ্গ হলো যুবকের

ত্বীনফল চাষ করে স্ব্প্ন ভঙ্গ হলো যুবকের

শেখ শফিউল আলম লুলু, ঝিনাইদহ;
বেকার যুবক নেওয়াজ শরীফ রানা। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ত্বীন ফলের চাষ করেছিলেন।
সফল উদ্দ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই যুবক। পরিবারের একমাত্র সম্বল তিনটি
গরু বিক্রি করে শুরু করেন ত্বীন চাষ। প্রায় এক বিঘা জমিতে চার শতাধিক গাছ
রোপন করেন। প্রতিটি গাছের চারা ক্রয় করেন ৩৫০ টাকা দরে। জমি তৈরি, চারা
রোপন ও পরিচর্যায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন। চার মাস
পর স্বপ্নের ত্বীন গাছে ফল ধরতে শুরু করে।

নিদিষ্ট সময়ে পাকও ধরে ফলে। রঙিন
স্বপ্নে বিভোর রানার মুখে হাসি ফুটে। ফল বিক্রির জন্য পাইকার ও খুচরা ফল
ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু একটি টাকার ফলও বিক্রি করতে
পারেননি। ফলে স্বপ্নের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার সেই ত্বীন ফল দুঃস্বপ্ন হয়ে ঝরে পড়ছে।
যা খাচ্ছে এখন পাখিতে এবং পচে নষ্ট হচ্ছে। সব হারিয়ে এখন দিশেহারা তরুণ
এই বেকার রানা। হতাশ নেওয়াজ শরীফ রানা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং
ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাবের হোসেনের ছেলে।
একই রকম অবস্থা জেলার আরো আট যুবকের। তারাও স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায়
চটকদার প্রচারণা দেখে ত্বীন চাষ করেছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাদের
সে স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেছে। সে জানায় এক বিঘা জমিতে ৪০০ চারা
রোপন করেন। একটি চারা তিনি ৩২০ টাকা মূল্যে ক্রয় করেন। এ পর্যন্ত জমি তৈরি
থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। তিন থেকে চার মাস
পর ফল আসে এবং পাক ধরে।

কিন্তু স্থানীয় বাজারে কেউ এই ফল কিনতে চাই না। ফলে
এলাকায় বিক্রি করতে না পেরে ঢাকায় পাঠায় কিন্তু সেখানেও ফল বিক্রি হয়নি।
একদিন পর তারা আমার পাঠানো ত্বীন ফেলে দিয়েছেন বলে জানায়। তাছাড়া এই ফল
পাকলে গাছ থেকে সংগ্রহের পর বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখায় যায় না।
কোটাচাঁদটপুর উপজেলার কাগমারি গ্রামের ফলচাষি হারুনর রশিদ জানান,
ইউটিউবে এক ব্যক্তির চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হই। এরপর চলতি বছরের এপ্রিল
মাসের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ টি চারা রোপন করি। এরমধ্যে মিশরীয়-১, মিশরীয়-
২, কোর্তামনি ও গোল্ড জাতের চারা রয়েছে। চার মাস পর গাছে ফল এসেছে কিন্তু
পাক ধরার পর ফলগুলো সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না, পচে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের দেশে এই
ফলের কোন ক্রেতা নেই। আবার কিছু কিছু ফলে পোকা হচ্ছে।

তাই এই ত্বীন ফল
আমাদের দেশের লাভজনক চাষ নয় বলেই আমি মনে করি। যে কারনে আমি ত্বীন ফল
বানিজ্যিকভাবে ছাষ করছি না, অন্য চাষিদেরও চাষ না করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা কৃষি সাপ্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার বিজযয় কৃষ্ণ হালদার
জানান, জেলায় এবার আটজন কৃষক ১.৮৭ হেক্টর জমিতে ত্বীন ফলের চাষ করেছেন।
এরমধ্যে কালীগঞ্জে ০.৩৪ হেক্টর, কোটচাঁদপুর ১.০৪ হেক্টর এবং বাকি .৪৯ হেক্টর
জমিতে চাষ হয়েছে ভারতীয় সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলার মাঠে। এই ফলটি
দেখতে দেশীয় ডুমুরের মত তবে সাইজে একটু বড় এবং পিছন সাইড কিছুটা
চ্যাপ্টা। তিনি আরো জানান যেহেতু এটা একটা নতুন ফল এটা কেমন হবে এ
নিয়ে আমাদের কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো করা হয়নি। কৃষকরা এ ফলের চাষ শুরু
করেছেন। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব এ ফলটি আসলে কেমন। আর নতুন

যেকোন ফল বাজারে কেমন চলবে এটাতো ক্রেতারাই বলতে পারবে। কৃষকরা তাদের
উৎপাদিত ত্বীন ফল বিক্রি করতে পারছেন না আমার জানা নেই। আমরা তাদের সাথে
কথা বলে খোঁজ খবর নিয়ে দেখি কিছু করা যায় কি না।
শেখ শফিউল আলম লুলু
ত্বীনফল চাষ করে স্ব্ধসঢ়;প্ন ভঙ্গ হলো যুবকের
শেখ শফিউল আলম লুলু, ঝিনাইদহ;
বেকার যুবক নেওয়াজ শরীফ রানা। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ত্বীন ফলের চাষ করেছিলেন।
সফল উদ্দ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এই যুবক। পরিবারের একমাত্র সম্বল তিনটি
গরু বিক্রি করে শুরু করেন ত্বীন চাষ। প্রায় এক বিঘা জমিতে চার শতাধিক গাছ
রোপন করেন। প্রতিটি গাছের চারা ক্রয় করেন ৩৫০ টাকা দরে। জমি তৈরি, চারা
রোপন ও পরিচর্যায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করেছেন। চার মাস
পর স্বপ্নের ত্বীন গাছে ফল ধরতে শুরু করে। নিদিষ্ট সময়ে পাকও ধরে ফলে। রঙিন
স্বপ্নে বিভোর রানার মুখে হাসি ফুটে। ফল বিক্রির জন্য পাইকার ও খুচরা ফল
ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু একটি টাকার ফলও বিক্রি করতে
পারেননি। ফলে স্বপ্নের উদ্যোক্তা হয়ে উঠার সেই ত্বীন ফল দুঃস্বপ্ন হয়ে ঝরে পড়ছে।
যা খাচ্ছে এখন পাখিতে এবং পচে নষ্ট হচ্ছে।

সব হারিয়ে এখন দিশেহারা তরুণ
এই বেকার রানা। হতাশ নেওয়াজ শরীফ রানা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৬নং
ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাবের হোসেনের ছেলে।
একই রকম অবস্থা জেলার আরো আট যুবকের। তারাও স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায়
চটকদার প্রচারণা দেখে ত্বীন চাষ করেছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তাদের
সে স্বপ্ন মাটির সাথে মিশে গেছে। সে জানায় এক বিঘা জমিতে ৪০০ চারা
রোপন করেন। একটি চারা তিনি ৩২০ টাকা মূল্যে ক্রয় করেন। এ পর্যন্ত জমি তৈরি
থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ৩ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। তিন থেকে চার মাস
পর ফল আসে এবং পাক ধরে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে কেউ এই ফল কিনতে চাই না। ফলে
এলাকায় বিক্রি করতে না পেরে ঢাকায় পাঠায় কিন্তু সেখানেও ফল বিক্রি হয়নি।
একদিন পর তারা আমার পাঠানো ত্বীন ফেলে দিয়েছেন বলে জানায়। তাছাড়া এই ফল
পাকলে গাছ থেকে সংগ্রহের পর বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখায় যায় না।

কোটাচাঁদটপুর উপজেলার কাগমারি গ্রামের ফলচাষি হারুনর রশিদ জানান,
ইউটিউবে এক ব্যক্তির চাষ দেখে অনুপ্রাণিত হই। এরপর চলতি বছরের এপ্রিল
মাসের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ টি চারা রোপন করি। এরমধ্যে মিশরীয়-১, মিশরীয়-
২, কোর্তামনি ও গোল্ড জাতের চারা রয়েছে। চার মাস পর গাছে ফল এসেছে কিন্তু
পাক ধরার পর ফলগুলো সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না, পচে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের দেশে এই
ফলের কোন ক্রেতা নেই। আবার কিছু কিছু ফলে পোকা হচ্ছে। তাই এই ত্বীন ফল
আমাদের দেশের লাভজনক চাষ নয় বলেই আমি মনে করি। যে কারনে আমি ত্বীন ফল
বানিজ্যিকভাবে ছাষ করছি না, অন্য চাষিদেরও চাষ না করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
জেলা কৃষি সাপ্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার বিজযয় কৃষ্ণ হালদার
জানান, জেলায় এবার আটজন কৃষক ১.৮৭ হেক্টর জমিতে ত্বীন ফলের চাষ করেছেন।
এরমধ্যে কালীগঞ্জে ০.৩৪ হেক্টর, কোটচাঁদপুর ১.০৪ হেক্টর এবং বাকি .৪৯ হেক্টর
জমিতে চাষ হয়েছে ভারতীয় সীমান্তবর্তী মহেশপুর উপজেলার মাঠে। এই ফলটি
দেখতে দেশীয় ডুমুরের মত তবে সাইজে একটু বড় এবং পিছন সাইড কিছুটা
চ্যাপ্টা। তিনি আরো জানান যেহেতু এটা একটা নতুন ফল এটা কেমন হবে এ
নিয়ে আমাদের কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনো করা হয়নি। কৃষকরা এ ফলের চাষ শুরু
করেছেন। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব এ ফলটি আসলে কেমন। আর নতুন

যেকোন ফল বাজারে কেমন চলবে এটাতো ক্রেতারাই বলতে পারবে। কৃষকরা তাদের
উৎপাদিত ত্বীন ফল বিক্রি করতে পারছেন না আমার জানা নেই। আমরা তাদের সাথে
কথা বলে খোঁজ খবর নিয়ে দেখি কিছু করা যায় কি না।

আপনি আরও পড়তে পারেন