দোহারে রাসেল হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:

ঢাকার দোহার উপজেলায় দুই শিক্ষার্থীর দ্বন্দে সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনায় রাসেল (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সুমন বাদী হয়ে রাত্রেই দোহার থানায় ৩৩ জনকে এজাহারভোক্ত ও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে হত্যার ঘটনায় বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। নিহত শেখ রাসেল উপজেলার মুকসুদপুর ইউনিয়নের মইতপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আব্দুর রশিদের ছেলে। সে ইটালীতে প্রবাসী হিসাবে ছিলেন,পরিবারের চাপে দেশে এসেছেন বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হতে। সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার মুকসুদপুর ইউনিয়নের মইতপাড়া গ্রামে কলেজ ছাত্র সোহান ও মনিরের মধ্যে প্রেম ঘটিত বিরোধের জেরে গত সোমবার সকালে সংঘবদ্ধ হামলায় রাসেল নিহত হয়। হত্যার ঘটনার বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ও বিকাল ৫টায় মইতপাড়া সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার বিকালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ আসলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্বজনরা। আর এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। উল্লেখ্য থাকে যে, জানা যায় দুই শিক্ষার্থী (মনির ও সোহান) একই প্রেমিকা রাখি নামের একটি মেয়েকে ভালোবাতো। মনিরের বন্ধু সোহান রাখির কাছে মনিরের বিরুদ্ধে ভুল বুজানোর জের ধরে মনির সোহানকে মারপিট করে গতকাল রোববার। এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় ঘটনাটি ওখানে থেমে যায়। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ঐ দ্বন্দ্বের জের ধরে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাকিল, সাইম মোল্লা, আল- আমিন, বিল্লাল, ফাহিম, সোহান, ইমন, রাজু, শফিকুল, ইমনসহ অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সোহানের পক্ষ নিয়ে মনিরের উপর হামলা চালালে প্রতিবেশী রাসেল থামাতে আসলে প্রতিপক্ষের হামলায় অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বিষয়টি এলাকাবাসী দেখে উত্তেজিত হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা সবাই মটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময়ে স্থানীয়রা আহত রাসেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।সংবাদটি দ্রুত মইতপাড়া গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা তাদের ফেলে রাখা মটরসাইকেলগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করে। বিচার চাই, বিচার চাই রাসেল হত্যার বিচার চাই, ছাত্রলীগের বিচার চাই, শাকিলের বিচার চাই ও সোহাগের বিচার চাই বলে স্লোগান দেয় বিক্ষোব্ধ জনতা। সংবাদ পেয়ে পুলিশ-র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা তিনঘন্টাব্যাপি অভিযান চালিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং দু্ই জনকে আটক করেন।সংবাদ পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে দোহার সার্কেল এএসপি জহিরুল ইসলাম,দোহার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, ওসি(তদন্ত) আরাফাত হোসেন, ফুলতলা পুলিশ ফাড়িঁর (ইনচার্জ) জাহাঙ্গীর আলম, র‌্যাব-১১এর সদস্যরাসহ মুকসুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম. এ. হান্নান খান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে চেষ্টা চালায়। দোহার ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থানে গিয়ে মটরসাইকেলের আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং মটরসাইকেল থানায় নিয়ে আসা হয়। দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় ৩৩ জনকে এজাহারভোক্ত ও ১৫/২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।সোমবার ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত চলমান রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপরাধী যে দলেরই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন