নওগাঁয় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা; গ্রেফতার-১

নওগাঁয় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা; গ্রেফতার-১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 

নওগাঁর মান্দায় সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে শিশুটির মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ওই রাতেই প্রতিবেশী জুয়েল (১৭) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জুয়েল ওই গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। শনিবার শিশুকে ধর্ষণের পর তার লাশ বাঁশঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে গ্রামের একটি বাড়িতে ইফতার ও দোয়ার অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানে নিহত ছাত্রীর বাবা-মা বিভিন্ন কাজ-কর্ম করছিল। তাদের কাছে থেকে তাদের মেয়ে একটু দূরে অন্যান্য শিশুদের সাথে খেলা-ধুলা করছিল। হঠাৎ করে বিকাল ৩ টার দিক থেকে নিহতের বাবা-মা তাদের সন্তানকে দেখতে না পেয়ে সম্ভব্য সবখানে খোঁজ করতে থাকেন। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অনুষ্ঠানের বাড়ির পার্শে বাঁশঝাড়ের এক স্থানে আবর্জনা দিয়ে ঢাকা কিছু দেখে তাৎক্ষণিক ভাবে সেই আবর্জনা সরিয়ে শিশুটির বিবস্ত্র মরদেহ দেখতে পান স্থায়ীয়রা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে মান্দা উপজেলার নিমবাড়িয়া পশ্চিম লক্ষ্মীরামপুর গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে ছয় বছর বয়সী একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে রাতেই শিশুটিকে হত্যার অভিযোগে জুয়েল নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে দেওয়া প্রাথমিক জবানবন্দিতে ওই যুবক শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সুপার বলেন, গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটি অন্য শিশুদের সঙ্গে প্রতিবেশী গোবিন্দ চন্দ্র সাহার বাঁশঝাড়ে খেলছিল। এ সময় প্রতিবেশী আমিনুলের ছেলে জুয়েল ওই বাঁশঝাড়ে বাঁশের কঞ্চি কাটছিল। অন্য শিশুরা বিকাল ৩টার দিকে নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেলেও জুয়েল ওই শিশুটিকে কৌশলে ডেকে নিয়ে বাঁশঝাড়ের পাশে অবস্থিত খড়ের পালার পাশে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির রক্তক্ষরণ হলে সে কান্নাকাটি করে এবং বিষয়টি বাবা-মাকে বলে দিতে চায়। ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস হওয়ার ভয়ে জুয়েল শিশুটির প্যান্টের কিছু অংশ ছিঁড়ে তার মুখে গুজে দিয়ে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ঝোপের মধ্যে বাঁশের পাতা ও কঞ্চি দিয়ে নিহত শিশুকে লুকিয়ে রাখে। শিশুটির প্যান্টের বাকি অংশ পাশের আত্রাই নদীর তীরে ফেলে দেয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাঁশঝাড়ের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটির মৃতদেহ দেখতে পেয়ে মান্দা থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে রাতেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধী জুয়েলকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে কয়েকশ গ্রামবাসীর সামনে গ্রেফতার জুয়েলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার দেখানো মতে প্যান্টের ছেঁড়া অংশ আত্রাই নদীর তীর থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মান্দায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। ঘটনার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য গ্রেফতার যুবককে রবিবার বিকালে আদালতে পাঠানো হবে।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন