পুলিশ থেকে ক্ষমা আদায়কারী সাহসী হাবিবা জান্নাতের কথা

হাবিবা জান্নাত—বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি। বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধ্যার পর  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তার গায়ে হাত দিতে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি গালি দেন পুলিশ কনস্টেবল রুহুল আমিন। এরপরই তিনিসহ অন্য শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুললে ওই কনস্টেবল তার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। এমনকি লিখিতভাবে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনাও করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ  থেকে। পহেলা বৈশাখের দিনে ঘটে যাওয়া ওই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়ে  বাংলা ট্রিবিউনের মুখোমুখি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী।

বাংলা ট্রিবিউন: পহেলা বৈশাখের ঘটনা সংক্ষেপে বলুন।  কী ঘটেছিল? আপনি কিভাবে ঘটনা মোকাবিলা করলেন?

হাবিবা জান্নাত: পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সংঘবদ্ধভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। সারাদিনের উৎসব শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমরা রাজু ভাস্কর্যের একপাশে এসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে আবার গোটা ক্যাম্পাস টহল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ওই সময় সেখানে অবস্থানরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা ওই জায়গায় এসে আমাদের সরে যেতে বলেন। পুলিশের আইজির গাড়িকে জায়গা করে দেওয়অর কথা বলে রুহুল আমিন নামের এক পুলিশ কনস্টেবল এসে আমার গায়ে ধাক্কা দেন। উপস্থিত ছাত্র ফেডারেশনের বন্ধুদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওই পুলিশ সদস্য আমাকে উদ্দেশ করে অশালীন  ভাষায় গালি দেন। সঙ্গে-সঙ্গে তাকে পাকড়াও করেন ছাত্র ফেডারেশনের কর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে এসে উপস্থিত হন পুলিশের কর্মকর্তারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। তাদের ঘটনা জানানোর পর তারা মৌখিকভাবে এর নিষ্পত্তি করতে চান। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল, লিখিতভাবে এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাবখানা ছিল এমন, তারা চাইলেই মুখে যৌননিপীড়ন করতে পারেন।  একরকম ‘স্যরি’ বললেই বিষয়টা শেষ হয়ে যাবে। পুলিশের এই অশালীন আচরণের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করি আমরা। বিক্ষোভের মুখে নতি স্বীকার করে প্রক্টরের কার্যালয়ে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতাকর্মী ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, পুলিশের রমনা জোনের ডিসি, এডিসি, শাহবাগ থানার ওসি ও পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা। এরপর দাবি অনুযায়ী লিখিতভাবে ক্ষমা চান ওই  রুহুল আমিন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ওই ঘটনার জন্য ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় আমাদের  কাছে অনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment