প্রাণের উৎসবে বাধা হতে পারেনি তীব্র গরম

রাজধানীর রমনা ও শাহবাগমুখী জনস্রোত থামেনি তীব্র গরমেও। সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে-সঙ্গেই শাহবাগ ও রমনা পার্কের দিকে নারী, পুরুষ রঙ-বেরঙের পোশাক পরে আসতে থাকেন। সঙ্গে শিশুরাও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই গরমের তীব্রতাও বাড়তে থাকে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের সমাগমও। গরমে চরম নাকাল হলেও মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাসের কোনও কমতি দেখা যায়নি। তারা প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছেন প্রাণ খুলেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রমনা ও এর আশেপাশের এলাকায় মানুষ বড়-বড় গাছের ছায়ায় বসে গরম থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অতিরিক্ত ভীড়ের কারণে তাও সম্ভব হচ্ছিল না। তীব্র গরমে শিশুদেরই বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ সুযোগে শরবত, পানি, বিভিন্ন পানীয়, আনারস, তরমুজ, ডাব, শসা ও কাঁচা আম অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে খুচরা ব্যবসায়ী ও হকারদের।

এদিকে, রমনা পার্ক এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে রাজধানীর ঝিগাতলা থেকে মহিবুর রহমানকে। তিনি বলেন, যত গরমই হোক, প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের এই উচ্ছ্বাস থেমে থাকে না। তাই গরম কোনও বিষয় নয়। ছুটির দিনে ঘুরতে বেরিয়েছি এটাই বড় কথা।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মাহফুজা আক্তার। তীব্র গরমেও রমনা এলাকায় ঘুরতে আসা প্রসঙ্গে বলেন, পহেলা বৈশাখতো বছরে একদিনই আসে। এছাড়া, এই এলাকায় নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সবসময় ঘোরাঘুরির সুযোগ হয়ে ওঠে না। গরম হলেও তাই আজকের দিনে ঘুরতে বের হয়েছি।

প্রাণের উৎসবে বাধা হতে পারেনি তীব্র গরম

প্রাণের উৎসবে বাধা হতে পারেনি তীব্র গরম তবে, কিছু ব্যতিক্রমও আছে। যারা সকালে এসেছিলেন শাহবাগ ও রমনা এলাকায়, তাদের কেউ-কেউ দুপুর ১টার পর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরুও করেছেন। তাদের মধ্যে একজন বাসাবো থেকে আসা ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সকাল ১০টার দিকে সপরিবারে রমনা পার্ক এলাকায় আসেন। দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘোরাঘুরির পর মৎস্য ভবন এলাকা থেকে রিকশা নিয়ে বাসায় ফিরে যেতে দেখা যায় তাকে। তিনি বলেন, দুপুর পর্যন্ত এই এলাকায় ঘুরেছি। গরম বেড়েছে, তাই বাসায় চলে যাচ্ছি। গরম কম থাকলে হয়তো আরও কিছু সময় কাটাতাম।

মুগদা থেকে ঘুরতে এসেছেন আবদুল হাই স্বপন। তিনি আরামবাগে কাগজের ব্যবসা করেন। দুপুর ১২ টার দিকে রমনা পার্কের বিপরীতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, গরম বেশি হতে পারে বলে ধারণা ছিল। এছাড়া, বিকেল ৫টার পর আবার পুলিশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই সকালেই ঘুরতে বের হয়েছি। তিনি বলেন, ভ্যাপসা গরমে অস্থির লাগছে। তাই দুপুরের মধ্যেই বাসায় চলে যাব।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতরের ডিউটি অফিসার আবহাওয়াবিদ রাশিদুজ্জামান বিকেল ৩টায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুপুর ১টার দিকে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকাল ৩টায় সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment