প্রেমিককে বরবেশে দেখে সহ্য করতে না পেরে নিজের পেটে ছুরি চালালেন প্রেমিকা

প্রেমিককে বরবেশে দেখে সহ্য করতে না পেরে নিজের পেটে ছুরি চালালেন প্রেমিকা

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি;

নেত্রকোনার মদন উপজেলাধীন কাইটাইল ইউনিয়নের বাঁশরী কান্দাপাড়া গ্রামে প্রেমিকাকে ছেড়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন পাপ্পু মিয়া (২২) নামে এক যুবক। বরবেশে বিয়ে করতে যাওয়ার অপেক্ষায় বরযাত্রী নিয়ে নববধূকে আনতে রওনাহওয়ার অপেক্ষায় বসেছিলেন পাপ্পু। কিন্তু রওনা হওয়ার আগেই সেখানে ছুটে আসেন মনি আক্তার(২৫) নামের এক তরুণী। বরসাজে পাপ্পুকে দেখেই নিজের পেটে ছুরিকাঘাত করে  আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। এসময় তিনি দাবি করেন, পাপ্পুর সঙ্গে তার প্রেম ছিল। ঘটনার পর বিয়ে ফেলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বর পাপ্পু।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকালে নেত্রকোনার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বাঁশরী কান্দাপাড়া গ্রামে এমনই ঘটনা ঘটে। পাপ্পু মিয়া বাঁশরী গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে। প্রেমিকা মনি আক্তার জেলার মদন নায়েকপুর ইউনিয়নের আখাঁশ্রী গ্রামের শাজাহান মিয়ার মেয়ে। মনি আক্তার (২৫) নামের ওই তরুণী বিবাহিত এবং এক সন্তানের জননী।

ঘটনার পর স্থানীয়রা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

এলাকাবাসী ও পাপ্পুর মিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, মনি ও পাপ্পু দুজনের দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। মনি চট্রগ্রাম পোশাক কারখানায় কাজ করে। পাপ্পু এলাকায়  একটি ইলেকট্রিক দোকান চালায়। মোবাইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেম হয়। প্রেমের সূত্রে অনেকবার চট্রগ্রাম গিয়েছে পাপ্পু। নানা জায়গায় তারা ঘুরে ফিরে একত্রে থেকেছে। কিন্তু সম্প্রতি পাপ্পুর পরিবার কেন্দুয়া উপজেলাধীন চিতুলিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে দুলেনা আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। দুই পরিবারেই বিয়ের ধুমধাম চলছে। নতুন বউকে তুলে আনতে বৃহস্পতিবার দুপুর দিকে বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার কথা পাপ্পুর। কিন্তু  প্রেমিক অন্যত্র বিয়ে করছে পরিচিত কারও কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে বুধবার রাতের বাসে করে চট্রগ্রাম থেকে এলাকায় আসে মনি আক্তার। পরে বরযাত্রী রওনা হওয়ার মুহূর্তে পাপ্পুর বাড়িতে গিয়ে হাজির হয় মনি। এক পর্যায়ে ক্ষোভে বিয়ে বাড়িতেই নিজের পেটে ছুরি মেরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় মনি। ঘটনা দেখে বিয়ে ফেলে এলাকা ছেড়ে পালায় পাপ্পু। পরে মনিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পাপ্পুর মা বেদেনা আক্তার জানান, আমার ছেলে এলাকায় ব্যবসা করে। আর ওই মেয়ে চট্রগ্রাম চাকরি করে পোশাক কারখানায়। বৃহস্পতিবার বরযাত্রী নিয়ে নতুন বউ আনতে যাওয়ার কথা পাপ্পুর। কারও কাছ থেকে খবর পেয়ে ওই মেয়ে বাড়িতে এসে পেটে ছুরি চালায়। সেই থেকে পাপ্পুর আর খবর পাচ্ছি না। তার মোবাইলটিও বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিয়ের আয়োজনও শেষ হয়ে গেল।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাওহীদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন