বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিলিপিন্সের ক্যাসিনোর মাধ্যমে পাচার হওয়ার পর ক্যাসিনোগুলোকে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের আওতায় আনা নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
ফিলিপিন্স অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে সোমবার ম্যানিলায় বিশ্ব ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিয়ে সংস্থাটির অর্থনীতিবিদ রোহির ভ্যান ডেন ব্রিংক এ তাগাদা দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের গচ্ছিত অর্থের ১০ কোটি ডলার ‘হ্যাকিংয়ের’ মাধ্যমে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে পাঠানো হয়।
সন্দেহ হওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া দুই কোটি ডলার সঙ্গে সঙ্গে আটকে যায়। অন্যদিকে ফিলিপিন্সে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের অধিকাংশ ক্যাসিনো হয়ে অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়।
ইতোমধ্যে এ ঘটনার তদন্ত করে ফিলিপিন্স সিনেটের ব্লু রিবন কমিটি কমিটি ও মুদ্রা পাচার কর্তৃপক্ষ (এএমএলসি) চুরির যাওয়া অর্থের একাংশ উদ্ধার করেছে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডেন ব্রিংক ম্যানিলায় সাংবাদিকদের বলেন, “ক্যাসিনোগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে (মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের) পুনর্গঠন করা উচিত। ফাঁকফোকর (মুদ্রা পাচারের) অবশ্যই বন্ধ হতে হবে।”
দেশটিতে ২০০১ সালে পাশ হওয়া মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনকে ‘একটি ভাল সূচনা’ অভিহিত করে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ বলেন, কিন্তু ফিলিপিন্সকে অবশ্যই ‘এটা (মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইন) পুনর্গঠনের মধ্যে রাখতে হবে, যাতে করে এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা না ঘটতে পারে।
২০০১ সালে পাশ হওয়া ওই মুদ্রা পাচার আইন সংশোধনে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একটি সময়সীমার বিরুদ্ধে গিয়ে আন্তর্জাতিক ‘গ্রে লিস্ট’ স্থান করে নেয় ফিলিপিন্স।
ওই সময় দেশটির আইন প্রণেতারা বাদানুবাদের পর ক্যাসিনোগুলোকে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের আওতায় না বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন।
ফিলিপিন্সে ব্যাংকিং বিষয়ে গোপনীয়তার কড়াকড়ি আইনের কারণে মুদ্রা পাচার ও কর ফাঁকি দেওয়ার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
দেশটিতে বিশ্ব ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কার্ল কেন্ড্রকিক সুয়া ব্যাংকিং গোপনীয়তার আইন সহজ করতেও জোর দেন বলে জানায় রয়টার্স।