বগুড়ার শেরপুরে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগে কোটি কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি :

বগুড়ার শেরপুরের ৩০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকুলে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগে কোটি কোটি টাকার অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন নেতাদের বিরুদ্ধে। এদিকে ঘুষের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় এমপি’র বিশেষ সুপারিশে সরকার দলীয় কর্মীদের নাম বাদ দিয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধে ২৪ জুলাই মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে সামনে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। জানা যায়, বাংলাদেশ প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীনে আউট সোর্সিং প্রকল্পে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ৩০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী ৩০টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় গত ১৫ জানুয়ারী। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সুত্রমতে ৩১ জানুয়ারী ছিল আবেদনের শেষ তারিখ। এ পদে নিয়োগ পেতে উপজেলার স্ব-স্ব ইউনিয়নের প্রায় ২৭৫ জন প্রার্থীরা আবেদন করে। প্রার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয় এবং ৬জন প্রার্থীর জাল সনদের কারণে আবেদনও বাতিল হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুত্রে জানা গেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মতে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে গজারিয়া, টাকা ধুকুরিয়া, বালেন্দা, উলিপুর, কালসিমাটি, পারভবানীপুর বালক, পারভবানীপ বালিকা, মাগুরারতাইড়, দলিল, সাঁতাড়া, স্বরো, বানিয়া গোন্ধাইল, বেওড়াপাড়া, দড়িহাসড়া, তালতা, গোপালপুর, ভীমজানি, ছোনকা, ভবানীপুর, আশগ্রাম, উপজেলা মডেল, বাংড়া, ঘোড়দৌড়, ঘোলঘরিয়া, চকধুলী, চক কল্যানী, নাকুয়া, নলুয়া, মালিহাটা, শিবপুর, লক্ষীকোলাসহ ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে নিয়োগ বিষয়ে উপজেলা মডেল ও ছোনকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মামলার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে উল্লেখিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ চুড়ান্ত প্রক্রিয়ায় অধিকাংশই স্থানীয় এমপি হাবিবর রহমানের বিশেষ সুপারিশ থাকার পাশাপাশি মাদক সেবনকারীর নাম রয়েছে বলেও বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে। মোটা অংকের ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজেলার সাতারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই পদে স্থানীয় এমপি’র ডিও লেটারে সরকার দলীয় কর্মীর বিপক্ষে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের বিএনপি নেতা জিহাদুল ইসলামের ভাতিজা ছাত্রদল কর্মীর নাম। তবে বিএনপি নেতার নাম। অন্যদিকে এ নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ বানিজ্যের ফায়দা লুটতে একাধিক প্রার্থী প্রতি ৭/৮ লাখ টাকা করে নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কতিপয় ক্ষমতাসীনরা। উক্ত আউট সোর্সিং প্রকল্পে ওই পদে কতিপয় নেতাদের অর্থ বানিজ্যের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসনের ত্রি-মুখী লড়াই চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে স্থানীয় এমপি’র ডিও লেটার সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর বিপক্ষে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর নাম থাকায় ফুঁসে উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। ডিও লেটার ও অবৈধ বানিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধে ২৪ জুলাই মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান শুভ, ছাত্রলীগ নেতা রনি সরকার, সবুজ, রবিন, রনি, হাবিবর, কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান শুভ বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীকে বাদ দিয়ে বিশেষ সুপারিশে ছাত্রদলের কর্মীকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টার প্রতিবাদসহ অর্থ বানিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতেই এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, নিয়োগ সম্পন্ন করার দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের। কেউ যদি অবৈধ বানিজ্য করে এরজন্য প্রশাসন দায়ভার বহন করবেনা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিছিল করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিয়োগের রেজাল্ট হওয়ার আগে কিছু বলা যাবে না, কে নিয়োগ পাবে আর পাবেনা নিশ্চিত করলেন কিভাবে? তাছাড়া অনৈতিক অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment