বগুড়ার শেরপুরে মানবাধিকারকর্মী মানুষ ঠকানোর নয়া কৌশল

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি
আইন কলেজে লেখাপড়ার শুরুতে তথা এ্যাডভোকেট (উকিল) পাশ না
করেই এ্যাডভোকেট পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারনা
করার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শেরপুরের এক মানবাধিকার নেতা রুহুল
আমিনের বিরুদ্ধে। আইনজীবি সমিতি তথা বার কাউন্সিলে পাশ না
করেই নিজের পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে বিভিন্ন জায়গায়
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নানা সমস্যার সমাধান দিতে বিভিন্ন পাড়া
মহল্লার মানুষকে ঠকানোর নয়া কৌশল নিয়ে ওই ভুয়া এ্যাডভোকেট ও
মানবাধিকার কর্মী রুহুল আমিন নিজেকে জাহের করছে এবং মামলার
কৌশলী হিসেবে অর্থ প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়
আইনজীবি, মানবাধিকার কর্মীর পাশাপাশি তিনি নিজের পরিচয়ের
সাথে নতুন করে যোগ করেছে আবার সাংবাদিক। উত্তরবঙ্গ সাংবাদিক
প্রেস ক্লাবের আবার নতুন সাধারন সম্পাদক ।অখ্যাত পত্রিকার কার্ড
ঝুলিয়েও প্রতারণার ফায়দা লুফে নিচ্ছে জনগন ও প্রশাসনের কাছ
থেকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের জামুর
গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে রুহুল আমীন দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে
একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছে।
ইতোপূর্বে প্রায় ১ বৎসর আগেও তিনি ছিলেন একজন আলু
ব্যাবসায়ী এবং পুলিশের গোপন সোর্স। সে থেকেই তার অবাধ
বিচরণ কিছু শান্তিপ্রিয় জনগনের মাঝে। অশিক্ষিত মানুষকে
নিয়েই তার খেলা এখন নিত্যদিনের সঙ্গি। তাইতো পুলিশের সোর্স
থেকে তার খায়েস হয় নিজেকে একজন গনমাধ্যমকর্মীকে হিসেবে
পরিচয়দানকারী। সে মোতাবেক একটি অখ্যাত পত্রিকার কার্ড
সংগ্রহ করে মোটর সাইকেলে প্রেস বা সাংবাদিক লিখে নিয়ে
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা। এদিকে আবার
এশিয়া ছিন্নমুল মানবাধিকার সংস্থার নেতার পদও নিজের দখলে রাখে।
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের কার্যালয়ে গ্রামীন জনগোষ্টিকে
কিছু সংখ্যকদের ভুল বুঝিয়ে বিচার শালিশের নামে সম্প্রতি মোটা
অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে রুহুল আমিনকে বহিস্কার

করেন সংস্থাটির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা। তারপরেও সে হাল ছাড়তে নারাজ
হয়ে তিনি অভিনব কায়দায় আরেক সংগঠন সার্ক মানবাধিকার
ফাউন্ডেশন নামে নতুন একটি মানবাধিকার সংস্থা নিয়ে আসে এবং
সেখানেও তিনি নিজেকে বগুড়া জেলার সভাপতির পদ হাতিয়ে নিয়ে
বিভিন্ন কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। একাধারে রুহুল আমিন
নিজেকে মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, পুলিশের সোর্সের
পাশাপাশি কিন্তু তার আইনী বিষয়ের লেখাপড়ায় হাল ছাড়েনি। সে
বর্তমানে আইনী লেখাপড়ার ২য়বর্ষের ছাত্র হলেও বর্তমানে তিনি
নিজের ব্যবহৃত পরিচয়দানকারী ভিজিটিং কার্ডে “ এ্যাডভোকেট-
বগুড়া জজকোর্ট”সহ সাংবাদিক এবং মানবাধিকার সংগঠনের স্ব-স্ব
পদবি লিখে নিয়ে এলাকায় অন্যায় রাজত্বও কায়েম করে চলছে বলে
বিভিন্ন মহলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে রুহুল আমিন নিজ এলাকা সহ আসে পাশের এলাকায় কিছু ঘটনা
ঘটতে না ঘটতেই পক্ষের বিপক্ষের লোকজনকে কৌশলে প্রতারণার ফাঁদে
ফেলে অর্থ আদায় করে বেড়াচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে একজন সিনিয়র আইনজীবি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে
বলেন, এ্যাডভোকেট- জজকোর্ট লিখতে আইনজীবি লেখাপড়ার
ফাইনাল শেষে অবশ্যই বার কাউন্সিল পরীক্ষায় পাশ করে নিবন্ধিত হতে হবে।
তাহলেই নিজেকে প্রকৃত আইনজীবি বলে দাবী করা যাবে, নচেৎ
ইহাও আইনের পরিপন্থি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুহুল আমিন বলেন, আমি আইনের দ্বিতীয় বর্ষের
ছাত্র। ভিজিটিং কার্ডে এ্যাডভোকেট লেখা আমার ভুল হয়েছে। আমি
এজন্য দুঃখিত।
এদিকে আইন পরীক্ষায় পাশ না করতেই আইনজীবি বা এ্যাডভোকেট,
কথিত মানবাধিকার নেতা ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী রুহুল
আমীনসহ শেরপুর উপজেলার আরও কয়েকজন হলুদ সাংবাদিকদের দৌরাত্ব ও
প্রতারনামুলক বিভিন্ন কর্মকান্ডের হাত থেকে জিম্মি দশা সাধারণ
মানুষকে বাঁচাতে এবং অনেকটাই কোণঠাসায় পরিণত প্রকৃত
গনমাধ্যমকর্মীদের সুন্দর ক্ষেত্র তৈরীতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সু-দৃষ্টি
কামনা করছেন সচেতনমহলেরা।##

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment