বনানী কবরস্থানে শায়িত হবেন কবরী

বনানী কবরস্থানে শায়িত হবেন কবরী

রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে বাংলা চলচ্চিত্রের বিখ্যাত অভিনেত্রী, নির্মাতা ও সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরীকে। এর আগে বাদ জোহর সেখানেই তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রীর ছেলে শাকের চিশতী।

এর আগে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢালিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল  ৭০ বছর।

বাংলার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। ঢাকার সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী সক্রিয় ছিলেন সিনেমায়। ক্যামেরার সামনে থেকে চলে গিয়েছিলেন পেছনে, পরিচালকের আসনে।

৭১ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল।

গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসার পরপরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কবরীকে।

পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় তাকে।

১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে জন্ম নেয়া মিনা পালের (কবরীর পূর্ব নাম) শৈশব ও কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গি বাজারে।

তার আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়। কবরী বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে।

সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।

১৯৬৪ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নির্মাতা সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মিনা পাল থেকে কবরী হয়ে উঠেন তিনি।

দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘সুজন সখী’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘সারেং বউ’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’সহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

অভিনেত্রী কবরী একাত্তরে কলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেখানে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন।

পরে দেশে ফিরে চলচ্চিত্রে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেছেন।

অভিনয়ের পাশাপাশি ২০০৬ সালে ‘আয়না’ নামে একটি চলচ্চিত্রের পরিচালনার মধ্য দিয়ে নির্মাণে অভিষেক ঘটে কবরীর।

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সরকারি অনুদানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ না‌মে দ্বিতীয় চল‌চ্চিত্র নির্মাণ হাত দিয়েছেন তিনি।নিয়মিত লেখালেখিও করেন কবরী।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন কবরী।

আপনি আরও পড়তে পারেন