বাংলাদেশে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করবে আইএফসি

বাংলাদেশে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করবে আইএফসি

বিনিয়োগ বাড়ানো এবং বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সফর করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন আইএফসির দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত আঞ্চলিক পরিচালক হেক্টর গোমেজ আং।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) আইএফসির ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয় পাঁচ দিনের সফর শেষে আইএফসির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা গোমেজ আং জানান, উন্নয়ন সংস্থাটির লক্ষ্য হলো, কর্মসংস্থানের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করা। দেশের টেকসই পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করা এবং সবুজ প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে নতুন এই বিনিয়োগ করা হবে।

সফরকালে তিনি ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, থিংক ট্যাংকস, সম্ভাব্য নতুন গ্রাহক এবং অন্যান্য মূল অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

গোমেজ আং এর সঙ্গে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের জন্য আইএফসির নবনিযুক্ত কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টমান এবং আইএফসির ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

জ্বালানি এবং জ্বালানি সঞ্চালন এবং কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নীত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সাশ্রয়ী আবাসন আইএফসির বিনিয়োগের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে আং চিহ্নিত করেছেন।

গোমেজ আং বলেন, ‘আইএফসি জ্বালানি বৈচিত্র্য উৎসাহিত করে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২০ শতাংশের বেশি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করেছে। আমরা জ্বালানির মিশ্রণ এবং সঞ্চালনের ক্ষেত্রে আরও কাজ করতে চাই। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক অঞ্চল, সবুজ, সাশ্রয়ী আবাসনে নতুন সুযোগ অনুসন্ধান করতে চাই’।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে এক বৈঠকের পর দেওয়া বক্তব্যে গোমেজ আং বাংলাদেশকে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সহায়তা করতে আরও বেশি বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়া একটি চ্যালেঞ্জ। সুতরাং টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এবং বাইরের বাণিজ্যিক ঋণের দিকে নজর দেওয়া অপরিহার্য।’

গোমেজ আং বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধিতে এবং উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

বিগত বছরগুলোতে আইএফসির বিনিয়োগ বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে এবং সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়নে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। এসব উদাহরণের মধ্যে রয়েছে বিকাশ, চালডাল, ট্রাক লাগবে এবং সিটি ব্যাংকে ইক্যুইটি বিনিয়োগ, যা মহামারির সময়ে ডিজিটাইজেশনকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করেছে। কোভিড-১৯ বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের জন্য অবকাঠামোর গুরুত্ব অনুধাবনে সাহায্য করেছে, যেটি আইএফসি চিহ্নিত অপর একটি বিনিয়োগ ক্ষেত্র।

মার্টিন হল্টমান বলেন, ‘আইএফসি এদেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে। মহামারির প্রথম ১৮ মাসে আমরা ব্যবসায় সহায়তা করতে এবং কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে ৪৭০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছি। এসব বিনিয়োগ ব্যবসা সচল রাখতে, রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে এবং কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে। আমরা চলতি অর্থবছরের মধ্যে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’

২০১০ সাল থেকে আইএফসি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের উন্নয়নে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। আগামী পাঁচ বছরে আইএফসির লক্ষ্যমাত্রা বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় খাতে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ কর্মসূচি, যার মধ্যে রয়েছে হালকা প্রকৌশল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, আর্থিক ও পুঁজিবাজার এবং প্রবৃদ্ধি-সক্ষম টেকসই অবকাঠামো।

এই বছর, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ বছরের অংশীদারিত্ব উদযাপন করছে। বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করতে বেসরকারি খাতে উৎসাহ দিতে আইএফসি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন