ভাঙা সংসারে শিশুর মানসিক বিকাশ হয় না: হাইকোর্ট

মা-বাবা আলাদা হয়ে যাওয়ার পর ভাঙা সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন।

এ সময় নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামে বিচ্ছেদে থাকা দম্পতি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের ৮ বছরের শিশু কার হেফাজতে থাকবে এ নিয়ে বর্তমানে আইনী লড়াই চলছে।

আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। আর শিশুর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএসএম শাহরিয়ার কবির। শুনানির পর অমিত দাস গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, আদালত উভয়পক্ষকে (বাবা ও মা) পারস্পরিক বোঝাপড়া করতে আরও সময় দিয়েছেন। এ বিষয়টি আগামি ৫ আগস্ট পরবর্তী আদেশের জন্য আবারও কার্যতালিকায় আসবে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৭ জুন নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার কুসুমদি গ্রামের তৌহিদা আক্তারের বিয়ে হয়। পরে এই দম্পতির ঘরে এক কন্যা শিশুর জন্ম হয়, যার নাম সাজফা সাজিদা। তবে দাম্পত্য কলহের কারণে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তখন সন্তানকে নিজের কাছে রাখার অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শিশুর বাবা সাজ্জাদুর। পরে ৩০ মে হাইকোর্ট ওই শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে নওগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে ২৭ জুন শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়। তখন শিশুর বাবা-মাও আদালতে হাজির ছিলেন। এরপর ওইদিন শুনানি শেষে ৮ বছরের শিশু সাজফা সাজিদাকে আপাতত মায়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই শিশুকে তার বাবা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন দেখতে পারবেন বলেও আদেশে বলা হয়। এ ছাড়া সংশ্নিষ্ট দুই পক্ষকে (বাবা ও মা) সংসার ও শিশুর স্বার্থ বিবেচনা করে দাম্পত্য কলহ মেটানো যায় কি-না, সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতেও তাগিদ দেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে অমিত দাশ গুপ্ত আদালতে বলেন, আদেশ অনুসারে শিশুটির বাবা দুইবার তার সঙ্গে দেখা করেছে। শিশুটির সঙ্গে বাবার সম্পর্ক হয়েছে। এখন বাবা শিশুর ভরণ পোষণের জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এরপর আদালত বাবা-মায়ের পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য ৫ আগস্ট পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment