মুরগির কেজি ১৮০, পেঁয়াজ ৮০

মুরগির কেজি ১৮০, পেঁয়াজ ৮০

ডিমের দাম সামান্য কমলেও আরেক দফা বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন- চাল, ডাল ও তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। এদিকে বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করায় কিছুটা কমেছে সিমের দাম। পাশাপাশি কমেছে কাঁচামরিচের দাম। এছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে।

শনিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর বাজারগুলোতে লেয়ার মুরগির ডিমের দাম আগের সপ্তাহ থেকে ৫-১০ টাকা কমে খুচরায় ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা দরে। ফলে হালিপ্রতি ২-৩ টাকা কমে মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৭ টাকায়। তবে দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম কিছুটা কমলেও বেড়েছে মাংসের দাম।

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকায়। আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৬০-১৬৫ টাকা কেজিতে। শুধু তাই নয়, গত এক মাসে ১২০ –১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ১৮০ টাকা। অর্থাৎ এক মাসে মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫৫-৬০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও। এক সপ্তাহ আগেও ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। এ মুরগির দামও গত এক মাসে কেজিতে ১০০-১২০ টাকা বেড়েছে।

মুরগির মাংসের দাম বাড়লেও গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৬০-৫৮০ টাকা কেজিতে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে।

শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ  বলেন, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর থেকে মুরগির চাহিদা বেড়েছে। আর তাতে দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, এক মাস আগেও মুরগির কেজি ছিল ১২০-১২৫ টাকা কেজি। এখন সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৮০ টাকা কেজিতে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, অফিস-আদালত, হোটেল-রেস্তোরাঁ খুলেছে। এছাড়া বিয়েশাদীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে চাহিদা বেড়েছে।

রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন  বলেন, গত এক মাসে মুরগির দাম ডাবল হয়েছে। একদিকে মুরগির চাহিদা বেড়েছে, অন্যদিকে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে মুরগির খামার বন্ধ ছিল। তাই চাহিদার তুলনায় মুরগির সরবরাহ কম। এ কারণে দাম বেড়েছে।

বাড্ডা বাজারে মুরগি কিনতে আসা জসিম উদ্দিন বলেন, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা শুনে আর দাঁড়াইনি। পরে দুই কেজি ওজনের পাঙ্গাশ মাছ কিনেছি ১২০ টাকা করে। তিনি বলেন, এত দাম দিয়ে মুরগি কিনে খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মাছ কিনেছি।

এদিকে দুদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। রামপুরা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মাইনুল হাসান বলেন, এক সপ্তাহে আগেও পেঁয়াজের কেজি ৪০-৪৫ টাকা ছিল। এখন বিক্রি করছি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূজা ও বন্যার কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কম হচ্ছে। তাই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।পেঁয়াজের পাশাপাশি আদার দামও বেড়েছে। বাজারে দেশি ছোট রসুনের কেজি ৬০ টাকা হলেও দেশি বড় রসুন বিক্রি ৮০ টাকায়। আর ভারতীয় রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০-২৫ টাকাতে।

রাজধানীর বাজারগুলোতে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা কেজি দরে সবজি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা পেঁপে। এ সবজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজিতে। বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে টমেটো ও গজর।

শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করায় সিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২০ টাকা কমে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা থেকে কমে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। করলা ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে। ঝিঙে ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা কেজি। বেগুন, পটল, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে।

বাজারে আসা শীতের অন্য আগাম সবজির মধ্যে ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

এছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লেবুর হালি ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের লাউ ৩০ টাকা ও জালি কুমড়া প্রতি পিস ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন