রাজার সঙ্গে গাবতলীতে চলে এসেছে বাংলার শেষ নবাব

রাজার সঙ্গে গাবতলীতে চলে এসেছে বাংলার শেষ নবাব

আর ক’দিন পরই ঈদুল আজহা। স্বাভাবিক সময়ে এ ঈদ ঘিরে কোরবানির বিস্তর আয়োজন থাকে। এবারও আছে, তবে তার সঙ্গে রয়েছে শঙ্কাও। পশুর হাট ঘিরে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে মানুষের মনে।

এমন শঙ্কা রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে এবারের কোরবানি ঈদের প্রস্তুতি। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে রাজধানীতে এবার বসছে ২১টি পশুর হাট। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ জুলাই থেকে হাট বসার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী গাবতলী পশুর হাটে পৌঁছে গেছে মাদারীপুরের রাজা, ঝিনাইদহের বড় ও ছোট বিশ্বাস এবং কুষ্টিয়ার বাংলার শেষ নবাব।

আজ (বুধবার) গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটের বেশিরভাগ অংশই খালি। কিছু সময় পর পর একেকটি ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে গরু। এরই মধ্যে হাটে নজর কেড়েছে মাদারীপুর থেকে আনা গরু রাজা। বিক্রেতার দাবি রাজাই মাদারীপুরের সবচেয়ে বড় গরু।

কুষ্টিয়া থেকে গাবতলীতে আনা হয়েছে বাংলার শেষ নবাব

রাজার পাশাপাশি ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে ঝিনাইদহ থেকে আনা দুটি গরু বড় ও ছোট বিশ্বাস।

আর সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে আনা বড় গরু আল্লাহর দান- ১ ও ২। রয়েছে কুষ্টিয়া থেকে আনা বাংলার শেষ নবাবও। এছাড়া হাটে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক গরু চলে এসেছে।

বিক্রেতাতের তথ্য মতে, হাটে এই মুহূর্তে ৫০ হাজার থেকে ২২ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে। হাট শুরু না হলেও অনেকই আসছেন পশু দেখতে। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, এবার হাবভাব ভালো লাগছে না। হয়তো কম দামে গরু বিক্রি করতে হবে।

ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে আনা বড় গরু আল্লাহর দান- ১ ও ২

কুষ্টিয়া থেকে ১৫ জন খামারি মিলে ২৪টি গরু এনেছেন গাবতলী হাটে। তাদের একজন সুমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতে এখানে এসেছি। আমাদের কাছে বিভিন্ন সাইজের গরু আছে। সাইজ ভেদে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দামের গরু আছে আমাদের কাছে।

আল্লাহর দান ও বাংলার শেষ নবাবের মালিক হাজী মো. আবদুল মজিদ বলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে আমি ৫টি গরু নিয়ে এসছি। এসবের মধ্যে আল্লাহর দান-১, আল্লাহর দান-২ ও বাংলার শেষ নবাব অন্যতম। এদের দাম যথাক্রমে ২২ লাখ, ২০ লাখ ও ৬ লাখ। গরুগুলো আমি নিজে ৪ বছর পেলে বড় করেছি। মানুষজন আসছে, দেখছে। সময় তো এখনও আছে। বিক্রি হবে ইনশাআল্লাহ।

বাজারে বড় বিশ্বাসের দাম ১৫ লাখ ও ছোট বিশ্বাসের দাম ১৩ লাখ টাকা হাঁকিয়েছেন মালিক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, করোনাকালীন বাজার না হলে এসব গরুর দাম আরও বেশি হতো। আমাদের বিক্রি দিয়ে কথা। বেশি লাভের দরকার নেই।

মাদারীপুরের রাজা। বিক্রেতার দাবি এটাই জেলার সবচেয়ে বড় গরু।

বরিশাল থেকে আনা হয়েছে বিশাল গরু। মালিক তার নাম দিয়েছেন ‘রাজা ভাই’। দাম হাঁকিয়েছেন ১৮ লাখ টাকা। তিনি নিজেই এটি সাড়ে ৪ বছর লালন পালন করেছেন।

মাদারীপুর জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি করেছেন মাদারীপুরের রাজার মালিক রনি। তিনি গরুটির দাম প্রত্যাশা করছেন ১৬ লাখ টাকা।

এদিকে মানিকগঞ্জ থেকে ৮০টি ছাগল নিয়ে এসেছেন মালিক মো. আনিছুর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কাছে ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের ছাগল আছে। এখন পর্যন্ত ৫টি ছাগল বিক্রি করেছি। এখন বাজারে ক্রেতা কম। শেষ সময়ে বিক্রি বেড়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বরিশালের রাজা ভাইয়ের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৮ লাখ টাকা 

পশুর হাট ‘বয়কটের’ পরামর্শ কারিগরি কমিটির
আসন্ন ঈদুল আজহায় দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কোরবানির পশুর হাট বয়কটের পরামর্শ দিয়েছে সরকারের কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তাদের আশঙ্কা, ঈদে গরুর হাটকে কেন্দ্র করে দেশের করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। রেকর্ড ছাড়াতে পারে সংক্রমণ।

জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দেশের সংক্রমণ যেহেতু এখনও ঊর্ধ্বমুখী, আর প্রতিদিনই যখন আমাদের সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যু হচ্ছে, এই অবস্থায় কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা এবং পশুর হাট বসানো সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন