রাশিয়াকে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিতে ঢাকার প্রস্তাব

রাশিয়াকে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিতে ঢাকার প্রস্তাব

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ নিতে রাশিয়াকে প্রস্তাব করেছে ঢাকা। তবে মস্কো ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় জড়াতে রাজি নয়।

সোমবার (১৯ জুলাই) উজবেকিস্তান সফর শেষে রাজধানীর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

গত ১৫ ও ১৬ জুলাই দুই দিনব্যাপী মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সংযুক্তি বা কানেক্টিভিটি সম্মেলনের ফাঁকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এমন প্রস্তাব করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, মিয়ানমারের সঙ্গে আপনাদের (রাশিয়া) ভালো সম্পর্ক। আমরা দ্বিপক্ষীয়ভাবে চেষ্টা করেছি, আমরা চাই রাশিয়া ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থা নিক। উনি (সের্গই ল্যাভরভ) উত্তর দেননি, রাজি হননি। তবে বলেছেন এটা আলাপ-আলোচনা করতে হবে।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ চীন ও রাশিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে বলে ল্যাভরভকে জানান ড. মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, রাশিয়া-চায়নাতো মিয়ানমারকে শক্ত অবস্থানে রাখছে। আমরা আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছি।’

প্রত্যাবাসনে চীনের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, ‘তাদের দিক থেকে তারা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারে সামরিক শাসন ক্ষমতা নেওয়ার পর চীনও ওদের রেসপন্স (সাড়া) পাচ্ছে না। চীন বলছে, ওরা নিজেদের ঘর সামলাতে ব্যস্ত। এজন্য তারা রেসপন্স করতে পারছে না, তারা চেষ্টা করছে।’

গত ১২ জুলাই রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে গৃহীত হয়। যা বিনা ভোটে জাতিসংঘে গৃহীত হয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অতীতে জাতিসংঘে বিভিন্ন প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীন মিয়ানমারের পক্ষ নিলেও ওই প্রস্তাবে বাংলাদেশকে সমর্থন করায় তাসখন্দে দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানান ড. মোমেন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।

গত বছর দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হয়নি রোহিঙ্গারা।

আপনি আরও পড়তে পারেন