রূপগঞ্জে খানাখন্দে ভরা সড়কে ভোগান্তি চিরকাল

রূপগঞ্জে খানাখন্দে ভরা সড়কে ভোগান্তি চিরকাল

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ

 

নগরপাড়া- ইছাখালী সড়কে ভাঙ্গা, স্থানে স্থানে গর্ত। প্রায়ই গাড়ী উল্টে পড়ে যায়। চনপাড়া-কাঞ্চন সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে ছোট বড় বেশ কিছু গর্ত। খোদ থানার সামনেই রাস্তার বেহাল দশা চিরকাল। এগুলো দেখার যেন কেউ নেই। ইছাখালী, থানার সামনে, ফজুর বাড়ি, কুদুর মার্কেট, মুড়াপাড়া- ভুলতা রাস্তার ভাঙ্গন এ যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। গাজী বাইপাস সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বালুর ড্রেজারের পাইপের গর্তে যানবাহন চলাচলই দায় হয়ে পড়েছে। বালু ভরাট বন্ধ হলেও পাইপ লাইনের গর্তগুলো আজ অবধি কেউ ভরাট করেনি। যেন এটা কারো দায়িত্বই নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো চোখেই পড়ে না উপজেলার কায়েতপাড়াবাসীর দুখ, কষ্ট আর ভোগান্তি। এটাই যেন তাদের নিয়তি।
নানারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানাসমৃদ্ধ জনপদের ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কটি ১০ বছর ধরে বেহাল হয়ে আছে, কিন্তু দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন সওজ কর্মকর্তা। জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ছয় কিলোমিটার এই সড়কের উভয় পাশে রয়েছে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক নামি-দামি শিল্প-কারখানা। সড়কটি দ্রুত প্রশস্ত করে পুননির্মানের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীরা।
বিভিন্ন কারখানার মালিক ও এলাকাবাসীরা জানান, মাঝে-মধ্যে তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ইট-বালি দিয়ে মেরামত করেন সড়কটি। কিন্তু ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন চলাচল করায় সেই মেরাত দুই-চার দিনের বেশি কাজে লাগে না। ছয় কিলোমিটার সড়কে যাতায়াতে এক ঘণ্টা তো লাগেই, প্রায়ই যানজটে দুই ঘণ্টার বেশি লাগে। পণ্যবাহী গাড়ি এই সড়কে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে থাকারও রেকর্ড রয়েছে বলে শিল্প-কারখানার গাড়িচালকরা জানিয়েছে।
ভুলতা বাসস্টেশন থেকে স্কুলবাসে ওঠেন ভায়েলা গ্রামের সোয়াদা ইসলাম। হাজী এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোয়াদা বলেন, ‘প্রায়ই খানাখন্দে রিকশা-অটোরিকশা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হই। অনেক সময় যানজটে আটকা পড়ে স্কুলবাস মিস করি।’
এই সড়কের পাশে একটি মুদি দোকান চালান মতিন প্রধান। তিনি বলেন, ‘দোকানের সামনে খানাখন্দ হয়ে পুকুরে পরিণতি হয়েছে। দোকান খুলতে পারছি না। খুললেই কাঁদা ছুটে আসে। সড়কের দুই পাশে অনেকেই দোকানপাট বন্ধ রাখে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, এসিআই সল্ট, সিম গ্রুপ, এনডিই, ওষুধ উৎপাদন কোম্পানি এসকেএফ, গ্যালকো স্টিল, মীর সিমেন্ট, ওয়াটা কেমিক্যাল, ক্রিয়েটিভ পেপার মিলস, অনন্ত পেপার মিলস, রূপসী কংক্রিট, ছাত্তার জুট মিলস, আরএফএল কারখানা ও গোডাউনসহ বিভিন্ন ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান। তাদের গাড়ি চলাচল করে প্রায় ২৪ ঘণ্টা।
সড়কটিতে প্রায় সারাক্ষণ যানজট থাকে। পুরো সড়কই খানাখন্দে ভরা। এসব খানাখন্দে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হয় মানুষ।
নারায়ণগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকবাল মেহেদী জানেন না কেন সড়টি মেরামত করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘সড়কটি কেন ঝুলে আছে তা জানা নেই। তবে একটি চিঠির আলোকে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত না পেলে কিছু বলা যাবে না। তবে দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে।’
কোন ধরনের দাপ্তরিক কাজ চলমান রয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে কী নির্দেশনা পেয়েছেন তাও তিনি বলতে পারেননি।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, কিছু দিন আগেই এ সড়কটি পুনঃনির্মান করা হয়ে ছিল। কেন এত দ্রুত এসড়কটি বার বার ভেঙ্গে যায় তা খতিয়ে দেখতে হবে। উপজেলার সকল ভাঙ্গাচুরা সড়কই খুব দ্রুত মেরামত করা হবে।###

 

আপনি আরও পড়তে পারেন