লক ডাউনের মধ্যে ঢাকা-বান্দুরা সড়কে ডাকাতি

রাজধানী ঢাকার পাশেই নবাবগঞ্জ উপজেলা। গুলিস্তান থেকে যাবার দূরত্ব মাত্র ৩২ কিমি.। প্রতিদিনই হাজারো গাড়ী ঢাকা যাতায়াত করলেও লক ডাউনের কারনে কিছুদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে যাত্রী সেবার গাড়ীগুলো। তবে থেমে নেই নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের গাড়ী ।

সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে মাছ নিয়ে যাওয়া একটি পিকআপ বান্দুরায় গিয়েছিল মাছ নিয়ে । মাছ বিক্রি করে ঢাকা যেতে রাত হয়ে যায় । ২২ এপ্রিল বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা যাওয়ার সময় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের মরিচা ব্রীজ পার হয়ে ঢালে কামারকান্দা অর্গানিক ভ্যালীর সামনে এলে একদল ডাকাত দাদের পথ আটকায় । ড্রাইভারের গাড়ীর চাবি নিয়ে যায় এবং গাড়ীতে থাকা মাছের ব্যবসায়ীকে যা আছে দিতে বলে ।

কোন প্রকার ডাক চিৎকারে কাজ হবে না বোঝে মাছ ব্যবসায়ী তার সাথে থাকা ১ লক্ষ ১৬হাজার টাকা দিয়ে দেয় । পরে তুলশীখালী ব্রীজের টোল ঘরে এসে জানালে টোল ঘরের লোকজন ডিউটিরত পুলিশকে ফোন দিয়ে আনিলে ভোক্তভোগী পুলিশের নিকট ঘটনার বর্ননা দেন ।

গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত প্রতিনিয়তই এ সড়কে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে যাত্রী সাধারণ। এক কথায় বলা যায়, ডাকাতের দখলেই রয়েছে এ সড়ক। ইদানিং এই অর্গানিক ভ্যালী জুড়ে রয়েছে অপরাধের স্বর্গরাজ্য ।সব কিছুর পরেও কোন এক অদৃশ্য কারণে ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে এ অর্গানিক ভ্যালী ।

গত কয়েকদিন আগেও দিনের বেলায় গরু চুরি করে হাতে নাতে ধরা পড়েও অদৃশ্য কারণে বেঁচে যায় অর্গানিক ভ্যালীর মালিক আশা শাহাদাৎ ।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানান, সন্ধ্যা থেকে সারা রাতেই ডাকাতের ভয়ে মানুষকে সতর্ক থাকতে হয়। এ সড়কপথে রাতে কেউ জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে চাইলেও ডাকাত আতংক তার সব প্রয়োজনকে থমকে দেয়।গত বছর ৪ জুন শনিবার সন্ধ্যার পর ঢাকা থেকে ফিরছিলেন তৎকালীন নবাবগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি সাইদুর রহমান । মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান পয়েন্টের মরিচায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি দেখে তিনি আঁতকে উঠেন। তিনি কোনো রকমে রেহাই পেলেও অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন ডাকাতের হাতে।

নবাবগঞ্জ উপজেলার টিকরপুর থেকে তুলসীখালি সেতু পর্যন্ত দুর্গম এলাকায় ডাকাতরা প্রায়ই সুযোগ বুঝেই হানা দেয়। এসব কারণে প্রশাসন ২টি পুলিশ বক্স নির্মাণ করেও ডাকাতের কবল থেকে বাঁচাতে পারেনি এ রোডের যাত্রীদের  । ডাকাতরা গাড়ি থামিয়ে লুটে নেয় মালামাল। অসহায় দৃষ্টিতে দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রতিরোধ করতে গেলেই জীবনের হুমকি।

কয়েক বছর আগে এ সড়কের বেনুখালী এলাকায় নবাবগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাসির চৌধুরীর মোবাইল ও ওয়ারলেস সেট ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ সড়কের টিকরপুর চক, বেনুখালী, খারসুর ও মরিচায় নির্মিত সেতুর ঢালে এপ্রোচের নিচে বসেই ডাকাতির পরিকল্পনা হয় এমন দাবি এলাকাবাসীর।

নবাবগঞ্জ অংশে রাতে পুলিশি টহল থাকলেও ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার সময় তাদের সারা পাওয়া যায় না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ রয়েছে।

এ সড়কের দুপাশে বিশাল বিল এলাকা। ডাকাতি সংঘটিত করেই নিরাপদে চলে যায় ডাকাতদল। থানা পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ থাকলেও এসব ঘটনার অধিকাংশেরই মামলা রেকর্ড নেই। ফলে দায় এড়াতে সুযোগ পাচ্ছে নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সিরাজদিখান থানার কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, বিষয়টি শেখর নগর তদন্ত কেন্দ্রে থেকে ১০ কি.মি দূরে। এই জায়গাটি খুবই বিপদ্দজনক হয়ে উঠছে। সিরাজদিখান-ঢাকা নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ এলাকার মোহনা। বর্তমানে ডাকাত পড়ার যে গুজব শুরু হয়েছে এভাবে গুজব হতে থাকলে অত্র এলাকায় এই সুযোগে ডাকাতদলরা ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ারও আশংকা রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন