শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ, জাতিকে মেধাশূন্য করতেই হত্যাযজ্ঞ

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ, জাতিকে মেধাশূন্য করতেই হত্যাযজ্ঞ

পটুয়াখালী ঃ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, আলহজ্ব মিসেস লুৎফুন নেছা বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রীশেখ হাসিনারযোগ্যনেতৃত্বের ফলেদেশ আজ অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে’। তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রীদেশের শহর গ্রাম অঞ্চলের অসহায়, গরীব ও দুঃস্থ নারীদের বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, আর্থিক সাহায্য, ঋণ প্রদান ও বিনা মূল্যে বিভিন্ন সামগ্রী প্রধান করে তাদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলছেন। তাই দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে হবে। ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পটুয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলয়াতনে জেলা প্রশাসন ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর এর আয়োজনে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কণ্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রীশেখ হাসিনার অঙ্গিকার বাস্তবায়নে সংসদ সদস্য মিসেস লুৎফুননেছা এর সুপারিশে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান ও কল্যাণ তহবিল হতে ২৫ জন দরিদ্র ব্যক্তির জন্য আর্থিক সহায়তা চেক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১৯ জন দরিদ্র মহিলাদরে মাঝে ১৯ টি সেলাই মেশিন বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন। জেলা প্রশাসক ড.মোঃ মাছুমুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌরসভা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এ্যাড. মোঃ সুলতান আহমেদ মৃধা, জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব কাজী আলমগীর হোসেন, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নান, জেলা পরিষদ সদস্য সালমা জাহান, প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী সামমুর রহমান ইকবাল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ হাসান সিকদার, হাজী হামেজউদ্দিন মৃধা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শাহলাম মৃধা, আব্দুল করিম মৃধা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ নজমুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দিলারা খানম, এসময় জেলা আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব কাজী রুহুল আমিন, জেলা যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সরদার সোহরাব হোসেন, জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ রফিকুল ইসলাম খোকন মৃধা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ হাসান সিকদার ,সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ লুৎফুর রহমান রাসেল সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী. ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান. ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালির মেধা-মনন-মনীষা শক্তি হারানোর দিন আজ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ,  জাতিকে মেধাশূন্য করতেই হত্যাযজ্ঞ

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস রক্তগঙ্গা পেরিয়ে গোটা জাতি যখন উদয়ের পথে দাঁড়িয়ে, ঠিক সেই সময়ই রাতের আঁধারে পরাজয়ের গ্লানিমাখা পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে এ দেশকে মেধাশূন্য করার জন্য দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরে এনে হত্যা করে। আজকের এই দিনে জাতির সেইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি রইলো গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বাহ্নেই পাকিস্তানি শোষক চক্র বুঝতে পেরেছিল এদেশের সহজ-সরল মানুষগুলোকে আর শাসন-শোষণ করা যাবেনা।
বাঙালি জেগে উঠেছে। এদেশে তাদের স্বৈরশাসনের পতন অনিবার্য। এটা কেবল কিছু সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এই পরাজয়কে সহজে মেনে নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা। বাঙালির এই জাগরণে এ দেশের সূর্য-সন্তান বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ছিল আলোকবর্তিকার মত। ভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালিকে দমিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানি শাসকদের সকল হীন-ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে তাঁরা বরাবর সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। এদেশের সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছেন। যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা ও সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এজন্যই পাকিস্তানি শাসকচক্র সেরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে এ দেশকে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করে ফেলার এক ভয়াবহ নীলনকশার পরিকল্পনা করে। বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে এদিন পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে ঘর থেকে তুলে নিয়ে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়- শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ দেশের বরেণ্য ও বাংলা মায়ের কৃতী সন্তানদের। ৭১’র ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে এই নীলনকশা বাস্তবায়নের সূচনা করে এবং মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের প্রাক্কালে এর নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বরে হত্যাযজ্ঞের শিকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা এখনও সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়নি। প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যে সংখ্যা দেয়া হয়েছে সে অনুযায়ী একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন- ৯৯১ শিক্ষাবিদ, ১৩ সাংবাদিক, ৪৯ চিকিৎসক, ৪২ আইনজীবী এবং ১৬ শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- ড. জি সি দেব, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক মুনীরুজ্জামান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. আলীম চৌধুরী, ড. গোলাম মোর্তজা, ড. মোহাম্মদ শফি, শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজউদ্দীন হোসেন, নিজামুদ্দিন আহমেদ লাডু ভাই, খন্দকার আবু তালেব, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, নাজমুল হক, আলতাফ মাহমুদ, নূতন চন্দ্র সিংহ, আরপি সাহা, আবুল খায়ের, রশীদুল হাসান, সিরাজুল হক খান, আবুল বাশার, ড. মুক্তাদির, ফজলুল মাহি, ড. সাদেক, ড. আমিনুদ্দিন, হাবিবুর রহমান, মেহেরুন্নেসা, সেলিনা পারভীন, সায়ীদুল হাসানসহ আরো অনেকে। আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর ও রায়ের বাজারের স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবে বাঙালি জাতি এবং তাদের এই আত্মত্যাগ চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে বীর বাঙালি। দিবসটি পালনে সরকারি ও বেসরকারিসহ বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment