ভুয়া তালাক সনদ : সব জেনেও মেনে নেন নাসির

ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়ে বৈধ উপায়ে হয়নি। তামিমা ও রাকিব হাসানের বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত নথি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। রাকিব হাসানকে ডিভোর্স না দিয়েই তামিমা সুলতানা তাম্মী ক্রিকেটার নাসির হোসেনকে বিয়ে করেন।

তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসানের করা এক মামলার প্রতিবেদন আজ আদালতে দাখিল করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। দাখিল করা সেই প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত করা হয়েছে : ক্রিকেটার নাসির হোসেন, তামিমা সুলতানা তাম্মী ও তার মা সুমি আক্তার।

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তামিমা ও তার মা মিলে কাজীর সহায়তায় ভুয়া তালাক সনদ তৈরি করেন। যার রিসিট কপিও সঠিক নয়। তবে এসব বিষয় সবই জানতে নাসির। সেসব জেনেও তামিমাকে অবৈধভাবে বিয়ে করেন তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, তালাকের কোনো নোটিশ পাননি রাখিব এবং তিনি তামিমাকে তালাকও দেননি। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, তামিমা তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত আইনের কোনো নিয়মই মানেননি। এক সময় তামিমা রাকিব হাসানের স্ত্রী ছিলেন। কিন্তু নাসির তামিমাকে আবারও বিয়ে করেছেন, সুতরাং আগের বিয়ের ডিভোর্স হয়েছে কি না তা আইনগতভাবে যাচাই-বাছাই করার কথা। তামিমা আমাদের কাছে দাবি করেছেন তিনি রাকিবকে ডিভোর্স দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে রাকিব কেন মামলা করলেন?

পিবিআই প্রধান বলেন, তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন কিন্তু তালাক হয়নি এ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখলাম তালাক হতে গেলে তিনটি শর্ত লাগে। প্রথমত সংশ্লিষ্ট কাজীকে উপস্থাপন করা, দ্বিতীয়ত যিনি তালাকপ্রাপ্ত হবেন অথবা যাকে তালাক দেওয়া হবে তার বাসায় একটি নোটিশ পাঠানো এবং তৃতীয়ত যিনি তালাকপ্রাপ্ত হবেন তার স্থায়ী ঠিকানায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি নোটিশ পাঠাতে হবে।

তিনি বলেন, প্রথমটি হলেও দ্বিতীয়তটিতে দাবি করা হয়েছে নোটিশ রাকিব হাসানের বাসায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যে তারিখে চিঠিটি রাকিব হাসানের বাসায় প্রসেস করা হয়েছে সেই সময় ওই বাসায় তিনি থাকতেন না। অর্থাৎ চিঠি প্রসেসের ছয় মাস আগে রাকিব অন্য বাসায় ছিলেন। যেই তারিখে চিঠিটি দেখানো হয়েছে সেই সময় ঠিকানাটি ভুল ছিল। অর্থাৎ সেই ঠিকানায় রাকিব থাকতেন না ওই বাসায়। এই প্রসেসটি মানা হয়নি এবং তারা সঠিক কথা বলছেন না। এছাড়া নাসির ও তামিমা ডাকযোগে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে যে চিঠিটি দেখিয়েছেন তাও সঠিক দেখাননি। কারণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেছেন তিনি এমন কোনো চিঠি পাননি।

পিবিআই প্রধান বলেন, তালাকনামাটি জালিয়াতির মাধ্যমে হয়েছে এবং এই জালিয়াতিতে তামিমার মা সুমি আক্তার সহযোগিতা করেছেন।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন