সম্পর্ক ভেঙে গেলে নিজেকে সামলে নেবেন যেভাবে

সম্পর্ক ভেঙে গেলে নিজেকে সামলে নেবেন যেভাবে

বর্তমানে মানুষ প্রধান যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা হলো সম্পর্কের সমস্যা। এই সমস্যায় যে শুধু তরুণ-তরুণীরা ভুগছেন তা কিন্তু নয়, বরং নানা বয়সীদের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা হচ্ছে। পরস্পরের বোঝাপড়ার অভাব, মতের অমিল, শ্রদ্ধার অভাব, উচ্চ প্রত্যাশাসহ নানা কারণে ভেঙে যায় সম্পর্ক। যখন দুজন মানুষ একটি সম্পর্কে থাকে, তাদের পরস্পরের প্রতি প্রত্যাশা এবং আবেগ অনেক বেশি থাকে। যখন সঙ্গী সেই প্রত্যাশার মাত্রা পূরণ করে না বা করতে পারে না, তখন তারা হতাশ বোধ করে। এটি পরবর্তীতে ব্যাপক ঝগড়াঝাটি, অপ্রয়োজনীয় অভিযোগ, প্রচুর ইমোশনাল ড্রামা এবং আঘাতে পরিণত হয়। যদি দুজনের একজনও এই বিষয়ে উদাসীন থাকে তবে এটি আর বেশি খারাপ আকার ধারণ করে। একটা সময় মনে হয়, সম্পর্কটি আর বয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

ব্রেকআপের পরে মানুষ সত্যিই ভেঙে পড়ে। তারা বেশি মানসিকভাবে আহত হয়। এক দিনের নয় বরং একসঙ্গে কাটানো দিন, সপ্তাহ, মাস এবং বছরগুলো থেকে বের হয়ে আসা সত্যি কষ্টকর। কিছু মানুষ থাকে যারা শক্তিশালী, তারা নিজেরাই নিজেকে সামলে নেয় এবং এগিয়ে যায়। কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যারা তাদের জীবনকে এমন কিছু ব্যক্তির কারণে নষ্ট করে দেয় যারা আসলে তাদের জীবনে থাকার কথা ছিল না এবং যোগ্য ছিল না। পুরুষ বা নারী যে কেউ মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ এটি যে কাউকে প্রভাবিত করতে পারে।

সম্পর্ক ভাঙার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আসা এবং স্বাভাবিক সুখি জীবন যাপন করা সত্যিই সহজ। সবার আগে আপনাকে মেনে নিতে হবে যে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। প্রয়োজনে পেশাদার কোনো কাউন্সিলরের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এমন সব অবস্থায় আমরা বুঝতে পারি না যে কী করা উচিত বা কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে। তাই এক্ষেত্রে ভরসাযোগ্য কাউকে দরকার। যার কাছে মনের কথা সব খুলে বলা যায়। সেইসঙ্গে এমন মানসিক এমন অবস্থায় নিজেকে সামলে নিতে করতে পারেন এই কাজগুলো-

মেডিটেশন

এটি শুরুতে কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে কিন্তু কয়েকদিন পরে অভ্যাস হয়ে যাবে। শুরুতে পাঁচ মিনিট করে এবং ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে থাকুন। এখানে মূল বিষয় হলো নিঃশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করা এবং মন থেকে নেতিবাচক চিন্তাগুলো মুক্তি দেওয়া। আপনি
ইউটিউব থেকে গাইডেড মেডিটেশনের সাহায্য নিতে পারেন।

ইতিবাচক থাকুন

নিশ্চিত করুন যে আপনি ইতিবাচক থাকছেন। যেমন প্রতিদিন মনে মনে বলবেন, আমি খুশি বোধ করছি, আমি শক্তিশালী, আমি আমার জীবনে এগিয়ে যাচ্ছি ইত্যাদি। এই ইতিবাচক দিকগুলো নিজে বিশ্বাস করতে শুরু করলে একটা সময় দেখবেন আপনার জীবনে সত্যি তাই ঘটছে।

ক্ষমা করুন

ক্ষমা করাকে অনেকে দুর্বলতা মনে করে থাকেন। কিন্তু এটি মোটেও দুর্বলতা নয়, বরং আপনি যে শক্তিশালী তার পরিচয়। তাই ক্ষমা করতে শিখুন। যে আপনাকে ছেড়ে গেছে তাকেও ক্ষমা করে দিন। ঘৃণা হলো এমন একটি বিষ যা আপনি নিজে পান করছেন কিন্তু আশা করছেন অন্যদের মৃত্যুর। তাই ক্ষমা করাই হলো আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকার উৎস।

নিজের শখগুলো পূরণ করুন

যেসব কাজ আপনাকে খুশি রাখে সেগুলো করুন। দুঃখের গান শোনার পরিবর্তে বন্ধু-স্বজনের সঙ্গে আড্ডা দিন, গল্প করুন। সম্ভব হলে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসুন। নতুন পরিবেশে পুরোনো দুঃখ অনেকটাই ভুলে থাকতে পারবেন। নিজের অপূর্ণ শখগুলোর দিকে মন দিন, সময় ভালো কাটবে। আপনি সহজেই সম্পর্ক ভাঙার কষ্ট থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন