সাভারে ৪৫০ টাকার ভাড়া ১২০০

সাভারে ৪৫০ টাকার ভাড়া ১২০০

মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রফুল্লচিত্তে কাজ করছিলেন সাভারের পোশাকশিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষ। আর প্রহর গুনছিলেন ছুটির। অবশেষে সোমবার (১৯ জুলাই) সব পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় শিকড়ের টানে কর্মস্থল ছেড়ে বাসস্ট্যান্ডে এসে হাজির ঘরমুখী এসব মানুষ। তবে বাসস্ট্যান্ডে প্রায় তিন গুণ ভাড়া নিচ্ছেন, ফাঁকা সিটেও বসাচ্ছে আরেকজনকে, এমনটাই অভিযোগ যাত্রীদের।

সোমবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ড, নবীনগর, বাইপাইল, শ্রীপুর, জিরানীবাজার ও আশুলিয়া বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। হাজার হাজার যাত্রী স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগ করার জন্য যেমন উদগ্রীব, তেমনি তাদের বাড়ি যাওয়ার সুযোগে বাসচালকরা ৩০০ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ১ হাজার টাকা। এত কেউ চড়ে বসছেন বাসে, কেউবা তর্কে জড়াচ্ছে পরিবহনশ্রমিকদের সঙ্গে।

আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে রংপুর বাড়িতে যাবেন সোহাগ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে পোশাক কারখানায় কাজ করি। দুপুর দুইটায় কারখানা ছুটি হয়েছে। তাই বাসায় এসে তড়িঘড়ি করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলাম। কিন্তু বাসের টিকিট করতে গিয়ে দেখি ভাড়া ১২০০ টাকা প্রতি সিট। আগে যেখানে ৪৫০ টাকা ভাড়া ছিল। আবার এক সিট ফাঁকা রাখার কথা বলে সেটিও বিক্রি করছেন। কিছুই করার নাই। বাড়ি যেতে হবে। মা ফোন করে যেতে বলেছেন, আর কি থাকা যায়?

নবীনগর পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে গোপালগঞ্জ যাচ্ছেন সুমন। তিনি বলেন, বিগত ঈদগুলোতে লকডাউন, গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা ইত্যাদি কারনে বাড়ি যেতে পারিনি। এবার সুযোগ পেয়েছি, লকডাউন শিথিল হয়েছে, বাড়িতে তো যাবই। ভাড়া যতই বেশি লাগুক আর যত ভোগান্তিই হোক। তবে বাসচালকরা এবার সুযোগ বেশি নিচ্ছেন। তারা ৪৫০ টাকার ভাড়া নিচ্ছেন ৭০০ টাকা করে। তবে আজ সব কারখানা ছুটি হয়েছে। বাড়ি ফিরতে একটু ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

আলিফ পরিবহনের চালক ময়নুল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছি। আমাদের গাড়ি চলেইনি। দুবেলা-দুমুঠো ভাতও ঠিকঠাক খেতে পারিনি। ঈদের পর আবার লকডাউন, তখন আবার গাড়ি বন্ধ হবে। কয়েকটি মাত্র দিন গাড়ি চালাব, এখানেও যদি যাত্রীরা অভিযোগ করে, তাহলে বলার কিছু নাই। আমরা কাউকে জোর করছি না। যার ইচ্ছা তিনিই যাচ্ছেন।

অপর গাড়ির চালক আশরাফুল জানান, আমরা তো বেশি ভাড়া নিচ্ছি না। আগে ৪৫০ টাকা ভাড়া ছিল এক সিটের, সেখানে দুই সিটের ভাড়া নিচ্ছি ৭০০ টাকা। এখানে বেশি কোথায় নিলাম? প্রতি সিটেই যাত্রী ওঠানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, যারা দুই সিটেই বসেছেন, তারা একই পরিবারের লোক। আর তারাই যদি অভিযোগ করেন, তাহলে কিছু বলার নাই।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমাদের চোখেও পড়েছে। আমরা বাড়তি ভাড়া নিলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যেসব জায়গায় বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন