সারা দেশে যাচ্ছে জয়পুরহাটের শজনে

জয়পুরহাটে উৎপাদন বেড়েছে শজনে ডাঁটার। পুষ্টিগুণে ভরা এসব শজনে ডাঁটা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, পতিত জমি, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে, জমির আইলে শজনে গাছ লাগানো হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত শজনে ডাঁটার ফলন হয়। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি দুই মাস ভরা মৌসুম। এ সময় জেলার বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে গড়ে প্রতিদিন ১০ টনের বেশি শজনে ডাঁটা ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়। পাইকারি বাজারে মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি শজনে ডাঁটা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা শহরের নতুনহাট বাজারে মৌসুমের প্রতিদিনই শজনের পাইকারি বাজার বসে। এই বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা বাইসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে  শজনে ডাঁটা নিয়ে এসে বিক্রি করছেন।

কৃষক ছমির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জমির আইলে ও রাস্তার পাশে কিছু শজনের গাছ লাগিয়েছিলাম। সেসব গাছে প্রতি বছরই শজনে ধরে। এবার ৯০ কেজির মতো শজনে বিক্রি করেছি। গাছে আরও কিছু শজনে আছে।

তিনি আরও বলেন, যে কোনো বড় গাছের ডাল কেটে লাগানোর এক বছরের মধ্যে ডাঁটার ফলন হয়। গাছ বড় হলে ফলন বাড়ে। গাছে আগাছা কেটে দেওয়া ছাড়া এতে তেমন কোনো খরচ হয় না।

শজনে ডাঁটার কাজে জড়িত শ্রমিক মোকসেদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, নতুনহাটে আমরা আটজন শ্রমিক এক ব্যবসায়ীর শজনে ডাঁটার কাজ করি। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ বস্তা শজনে বস্তাবন্দী করা হয়। আমরা বস্তা প্রতি ৬০ টাকা করে পাই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চলে। শজনে ডাঁটা ওজন করে নেওয়া, আঁটি বাঁধা, বস্তা করা এরপর ট্রাকে তুলে দেওয়া সবই করতে হয়।

শজনে ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে শজনে কেনা হচ্ছে। প্রতিদিন এক হাজারের বেশি মণ শজনে কেনা হয়। এসব শজনে ডাঁটা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। কেজি প্রতি দুই থেকে চার টাকা লাভে শজনে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. রাহেলা পারভীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলার পাঁচ উপজেলায় গত মৌসুমে ৩৭৫ হেক্টর জায়গায় শজনের চাষ হয়েছে। শজনে উৎপাদন হয়েছে সাত হাজার পাঁচ শ মেট্রিক টন। এই মৌসুমে ৩৭৫ হেক্টরের বেশি জায়গায় শজনের চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২০ টন করে শজনে ডাঁটা হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। এতে উৎপাদন গতবারের চেয়ে বেশি হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন