স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতা ও পাপের রাজনীতি

ভাবছিলাম করোনাকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে লিখব না। কিছু বলব না। যার যার মতো চলছে, চলতে থাকুক। ভালো থাকুক। সুখে থাকুক। কিন্তু জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এখন আর না বলে পারছি না। প্রশ্নটা আমার জীবনের। তাই কিছু কথা বলতেই হবে। প্রতিষ্ঠান চালানোর অদক্ষতার একটা সীমা থাকে। সবকিছুর শেষ থাকে। কিন্তু এখানে কোনো কিছুই নেই। বিশ্বাস করুন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পারছেন না। তার কারণে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিপদে পড়ছে মহামারীর এই কঠিনতম সময়ে। তিনি হঠাৎ করে মধ্যদুপুরে অন্ধকার গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন। ব্রিফিং করেন মিডিয়ার সামনে। তারপর চলে যান আবার অজ্ঞাত অবস্থানে। সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দেন না। মাইক অফ করে সরে পড়েন। মাননীয় মন্ত্রী! আপনাকে ব্রিফিং করতে হবে কেন? স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা খারাপ করছেন না। তাদের ওপর আস্থা রাখুন। বিশ্বাস রাখুন। তারা আপনার অধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তাদের ব্রিফিং নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। অনেক কষ্ট করছেন তারা। প্রতিদিন ব্রিফ করে সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরছেন। জানাচ্ছেন দেশবাসীকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তারা ভুল করলে আপনি শুধরে দিন। কারণে-অকারণে আপনাকে মিডিয়ায় মুখ দেখাতে হবে কেন? ইরাকের সাদ্দামের তথ্যমন্ত্রী সাহাফের মতো আপনি নন। তার একটা স্টাইল ছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়ে। তিনি বিশ্বকে জমিয়ে রাখতেন মনের মাধুরী মিশিয়ে। এখনকার এই যুদ্ধ অন্যরকম। বিশ্বকে তছনছ করে দিচ্ছে অজ্ঞাত শত্রু। বৈশ্বিক মহামারীর যুদ্ধকালীন নেতা হিসেবে আপনার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। আপনি ভালো বলতেও পারেন না। বলতে গিয়ে সবকিছু গুলিয়ে ফেলেন। তার পরও হুটহাট করে মিডিয়ায় আসতে হবে কেন? মনে রাখুন, আপনার চেহারা দেখলে মানুষের মনে পড়ে যায় আপনার বাবা কর্নেল (অব.) মালেকের কথা। তিনি ছিলেন স্বৈরাচারী সরকারের মেয়র। ঢাকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। মতিঝিলের আল্লাওয়ালা ভবনের কথা আপনার মনে আছে কিনা জানি না। দৈনিক বাংলা থেকে শাপলা চত্বর সড়কে ছিল সেই ভবনটি। কঠিন আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সেই ভবনটি। ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর। সেই ইতিহাসকে কখনো পাশ কাটানো যায় না, এড়ানো যায় না। মাননীয় মন্ত্রী! আপনি বা আপনার মতো অনেকেই বিশাল অবস্থানে রয়েছেন। অথচ ২০০১ সালের আন্দোলনের মহানায়করা কোথাও কেউ নেই। অনেকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বিদায় নিয়েছেন এক মেয়াদে। দ্বিতীয় মেয়াদে এমপিও হতে পারেননি। লড়াইয়ে সব সময় দরকার দক্ষ সৈনিক আর কমান্ডার। যুদ্ধ হবে, আবার সাধারণ মানুষকে আস্থায় রাখতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চার্চিলের বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল জনসাধারণকে আস্থায় রাখা। চার্চিল শেষ দিকে অনেক সংকট মোকাবিলা করেছেন। আমাদের এখনকার যুদ্ধটা অন্যরকম। এ যুদ্ধের নায়ক চিকিৎসক, নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মী। এই মানুষগুলোকে লড়াইয়ে তৈরি করতে গত তিন মাসে কী করেছেন? নিজের বুকে হাত দিয়ে বাস্তবটা বলুন। স্বাস্থ্য খাতের ঘাটে ঘাটে এখনো অনেক সিন্ডিকেট। বিশ্বাস করি না আপনার পুত্রকে নিয়ে বাজারি কথাবার্তা। গুজবে কান না দেওয়াই ভালো। আলোচনা সফলভাবে কাজ করা নিয়ে। বাস্তবে মানুষ কর্মদক্ষতা দেখতে চায়। দরকার ছিল প্রতিদিন সব জেলার সিভিল সার্জনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা। তাদের মতামত নেওয়া। সিনিয়র ডাক্তার, সাবেক সচিব, মন্ত্রী, সাবেক উপদেষ্টাসহ সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। সবার পরামর্শ শোনা। ভালো পরামর্শ শুনে কাজ করার মধ্যে ছোট হওয়ার কিছু নেই। আপনি কোনোটাই করেননি। সংশ্লিষ্টদের কথা শুনে ব্যবস্থা নিলে আজ এত সংকট তৈরি হতো না। মানুষের মধ্যে হতাশা আসত না। চিকিৎসক আর স্বাস্থ্যকর্মীদের চোখে জল থাকত না। তাদের অনেকে হাসপাতাল ছেড়ে যেত না। মানুষ সাধারণ চিকিৎসাসেবা পেত। যোদ্ধাকে মাঠে পাঠাতে হয় পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র, গোলাবারুদ দিয়ে। দক্ষ কমান্ডার তা-ই করে। কর্মদক্ষতার আনন্দ সব সময় আলাদা।

মানুষ কথামালায় বিশ্বাস করে না। বাস্তবে অ্যাকশন দেখতে চায়। আপনি পারেননি। চেষ্টাও করেননি। আর কাজ করতে সাংগঠনিক দক্ষতা লাগে। ব্যবস্থাপক হিসেবে সফলতা লাগে। আপনার কোনোটাই নেই। চিকিৎসকদের সমস্যা তাদের চেয়ে বেশি কে বুঝবে? শুরু থেকেই আপনার কোনো দক্ষ উদ্যোগ মানুষকে আশ্বস্ত করতে পারেনি। বেসরকারি হাসপাতালের মালিকদের নিয়ে বৈঠকটিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের করতে হয়! এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক একজন প্রতিমন্ত্রী। তার সঙ্গেও আপনার সমন্বয় নেই। থাকলে তাকে ডেকে তার সঙ্গে বসতে পারতেন আগে। তাও করেননি। তাহলে আপনি করছেনটা কী? ফরিদপুর থেকে খবর পাই পর্যাপ্ত ভেনটিলেশন নেই। সিলেটের অবস্থা আরও বেহাল। চট্টগ্রামে সুসংবাদ নেই। নরসিংদী লকডাউন। এ পরিবেশে ধন্যবাদ নারায়ণগঞ্জের সেই চিকিৎসককে। সাহস করে তিনি বলে ফেলেছেন বাস্তবতার কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই সবকিছু জানাতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের ভিডিও কনফারেন্সগুলো দেখেছি। সবাই বলছেন, সব ঠিক আছে। সব ঠিক থাকলে এত সমস্যা কেন? সত্যটা বলুন। তিনি শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। বঙ্গবন্ধুর মতো তিনিও বাস্তবটা জানতে চান। শুনতে চান আপনাদের কাছে। বৈশ্বিক মহামারীতে লুকোচুরির কিছু নেই। বিশ্ববাস্তবতা সবার জানা। সংকট সবখানেই আছে। নারায়ণগঞ্জের সেই চিকিৎসক সত্য বলেছেন। আর বলেছেন বলেই সংকটের নিরসন হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা আর কনফারেন্সে থাকা রাজনীতিবিদদের বলছি, শুধু জি স্যার, জি আপা, সব ঠিক আছে বললে চলবে না। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই সব জানাতে হবে। তিনি সব জানলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। সংকটের নিরসন হবে।

একটা খারাপ সময় অতিক্রম করছি। বিশ্ব আজ তছনছ। পবিত্র কাবাঘরের কপাট বন্ধ। আজান হয়, নামাজ হয় না মসজিদে। মন্দির, গির্জায় প্রার্থনা নেই। এ সময়টা নিয়ে রাজনীতি কেন হবে? সময়টা মানুষের জন্য কাজ করার। আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানোর। প্রার্থনা করে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার। সতর্ক থাকার, সতর্ক করার। মানবিকতার আহ্বানে সাড়া দেওয়ার। প্রকৃতির ভয়াবহ প্রতিশোধ থেকে রক্ষা পাওয়ার। তাই সুন্দর আগামীর জন্য অহমিকা ছাড়ুন। নিষ্ঠুর রাজনৈতিক বিতর্ক থেকে দূরে থাকুন। মনে রাখুন, একবার আক্রান্ত হলে কেউ পাশে আসবে না। আপনজনরাই সরে যাবে নীরবে। কেউ ফোনও ধরবে না। মানবতা আজ হিমঘরে। একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। একদল ব্যস্ত তার দলীয় পরিচয় নিয়ে। বড় অদ্ভুত আমাদের মানসিকতা। বড় অদ্ভুত এক সমাজ। এত কিছুর পরও নষ্টামি থেকে আমরা সরতে পারছি না। ঘরে বসে কিছু মানুষের মাথা আরও নষ্ট হয়ে গেছে। দোহাই, একজন মেধাবী চিকিৎসককে নিয়ে রাজনীতি করবেন না। এই চিকিৎসক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি, চিকিৎসক মঈন বাসা থেকে বের হচ্ছেন। তার অবুঝ সন্তান দুই পা জড়িয়ে ধরে আছে বাবার। কিছুতেই পা ছাড়ছে না। চিৎকার করে কাঁদছে তুমি বাড়ি থেকে বের হবে না। সন্তানকে কোনোভাবে বুঝিয়ে বের হলেন মানবতার কাজে। আক্রান্ত হলেন। বিভাগীয় শহর সিলেটে পর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। মঈনের ধারণা ছিল ঢাকা এলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। চিকিৎসা পাবেন। ভালো হয়ে ফিরে যাবেন। ঢাকা আসতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চান। পাননি। এরপর চাইলেন আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স। তাও পাননি। শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এলেন। মারা গেলেন চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তার পরও এই মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে? পারলে তার পরিবারের পাশে থাকুন। ক্ষমা চান আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার জন্য। না পারলে চুপ থাকুন। এ করোনাভাইরাস ডাক্তার চেনে না। নার্স চেনে না। প্রধানমন্ত্রী, রাজকুমারী, রানী, মন্ত্রী কাউকে চেনে না। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীকেও ছাড় দেয়নি। ভয়াবহ ভাইরাস থেকে সাবধান থাকুন। বন্ধ করুন হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো।

বিশ্বজুড়েই মানবতা কাঁদছে। বাস্তবতা এখনো অনেকে বুঝতে পারছে না। কঠিন আগামী আমাদের সামনে। এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান সবাই। মানুষের কথা বলুন। মানুষ না থাকলে রাষ্ট্র, সরকার, ক্ষমতা সবকিছুই মূল্যহীন। কানাকড়িও দাম নেই কোনো কিছুর। জানি বাস্তবতা অনেক কঠিন। সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মে চলে না। চারদিকে সংকটের শেষ নেই। ত্রাণের গাড়ি সড়কে লুট হচ্ছে। মানুষ ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করছে। গার্মেন্টকর্মীরা রাজপথে দাবি নিয়ে। এ পরিস্থিতি কীভাবে আমরা মোকাবিলা করব? আগামী দিনের অর্থনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। বৈশ্বিক মহামারী মোকাবিলা করতে হবে আর্তমানবতাকে জাগিয়ে তুলে। কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে চাল চুরিসহ সব অনিয়ম। চাল চোর ধরছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তাকে ছাড়াতে এমপিকে কেন আদালতে যেতে হবে? আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতিকে কেন ছুটে বেড়াতে হবে? এমনিতে অনেক জনপ্রতিনিধি এখন গায়েব। তোদের খোঁজখবর নেই। নষ্ট রাজনীতির পাপের ফসল চাল চুরি। একজন চেয়ারম্যান, মেম্বারকে মনোনয়নের জন্য অর্থ দিতে হয়েছে। পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানও বাদ যাননি। সবাই অর্থ ব্যয় করেছেন মনোনয়নে। দলীয় পদপদবির জন্যও টাকা দিতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় পাপিয়ারা আসে রাজনীতিতে। কলুষিত করে আমাদের সমাজ ও রাজনীতিকে। করোনাভাইরাসের পর এ অবস্থার কি অবসান হবে? পদপদবি অর্থের বিনিময়ে বিক্রি বন্ধ হবে? জানি একবার আমাদের কোনো কিছু নষ্ট হলে আর ভালো হয় না। বরং দিন দিন আরও খারাপ হতে থাকে। কবি বলেছেন, ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’। করোনাভাইরাসমুক্ত বিশ্ব কি স্বাভাবিকতায় ফিরবে?

সুড়ঙ্গের শেষ কিনারে আলোর রশ্মি এখনো উদয় হয়নি। ভয়াবহতা থেকে কবে মুক্ত হব জানি না। চারদিকে সব নিষ্ঠুরতার চিত্রই দেখছি। মানুষের মানবিক অনুভূতিগুলো চলে গেছে। বুকটা ভেঙে যায় অনেক কিছু দেখে। নিজের সন্তানরা মাকে জঙ্গলে ফেলে যায়! সন্দেহ করোনাভাইরাস। যাওয়ার আগে বলে যায়, মা তুমি এইখানে থাক। আমরা ফিরে আসব এক ঘণ্টা পর। তারপর তোমাকে নিয়ে যাব বাড়িতে। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকব। সন্তানদের বিশ্বাস করেন মা। বসে থাকেন জঙ্গলে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত নেমে আসে। সন্তানরা কেউ আসে না। অজানা-অচেনা জঙ্গলে বসে থাকা মায়ের তবু বিশ্বাস সন্তানরা আসবেই। রাত বাড়তে থাকে। মাঝরাতে জঙ্গল থেকে কান্না শুনে সখীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দেয় এলাকাবাসী। প্রশাসনের লোকজন পাঠান ইউএনও। উদ্ধার করেন সেই মাকে। তারপর পাঠিয়ে দেন ঢাকায় চিকিৎসার জন্য। হায়রে সন্তান! হায়রে সমাজ! কোথায় যাচ্ছি আমরা? এ গন্তব্য আমাদের আর কত ভয়াবহ চিত্র দেখাবে? করোনা রোগী সন্দেহে পিতা বাড়িতে ঠাঁই দেননি পুত্রকে। আরেক মা হয়েছেন গ্রামছাড়া। মানবিকতা নিয়ে কথা বলতে আর মন চায় না। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে আমাদের। আগামীর বিশ্ব কোথায় গিয়ে ঠেকবে জানি না। তবে করোনা আমাদের অনেক কিছু জানিয়েও দিচ্ছে। বুঝিয়ে দিচ্ছে কোথায় আছি আমরা।

দুই মাস আগেও কি চিন্তা করেছি এমন একটা পরিবেশের? রাজনীতির মাঠটা অনেক দিন থেকেই শেষ হয়ে গেছে। যুব মহিলা লীগে পতিতার সর্দারনিও জেলা কমিটির দায়িত্ব পায়! কী করে পায়? সবাই বোঝে, সবাই জানে। এক দিনে কোনো কিছু হয়নি। তিল তিল পাপের বিশাল সাগর তৈরি হয়েছে। সেই সাগরে আছে ভয়ঙ্কর সব কাহিনি। লুটেরারা ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়ে গেছে একবারও কি তদন্ত হয়েছে? প্রশান্ত হালদার এক দিনে তৈরি হয়নি। ধীরে ধীরে হয়েছে। বিচারহীনতা ও জবাবদিহি না থাকার সংস্কৃতি সর্বনাশ করেছে। বারোটা বাজিয়েছে সমাজের। শুধু ভয়াবহতার রেশ চোখে পড়ছে। আগামীতে আরও বড় আকারে বেরিয়ে আসবে। তখন হয়তো অনেক কিছু আর সামাল দেওয়া যাবে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাস্তবতায় একই চিত্র পাই। প্রকৃতির নিষ্ঠুর প্রতিশোধে আজ সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রাজা ইডিপাসের গল্প শুনিয়ে লিখেছেন, ‘রাজা বা শাসকদের পাপ ও অপকর্মের ফলে আধুনিক যুগেও শাসিত সমাজ বন্যা, দুর্ভিক্ষ, ভূমিকম্প, মহামারী ইত্যাদি দ্বারা শাস্তি পেয়ে থাকে।’ ইতিহাস তা-ই বলে। বিশ্বজুড়ে দাপুটে শাসকদের অনেক কর্মকা-ই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব ছিল বড় বড় দেশগুলোর শাসকদের কথায় কথায়। এখন তারা চুপসে গেছেন। বড় দেশগুলো এখন দিশাহারা। তাদের অনেক পাপের প্রায়শ্চিত্ত আমাদের করে যেতে হচ্ছে।

লেখক: সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

আপনি আরও পড়তে পারেন