হল খোলা সহ ৩ দফা দাবীতে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

"হল খোলা সহ ৩ দফা দাবীতে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ"

ইমন ইসলাম,জাবি প্রতিনিধি।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবারের মর্মান্তিক ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে এবং ৩ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
গত শুক্রবারের মর্মান্তিক হামলার ঘটনায় প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত রয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন  স্লোগান দেওয়ার মাধ্যমে বিচার দাবি জানাচ্ছে। তাদের ৩ টি দাবির মধ্যে প্রথম দাবিটি হলো গতকালের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ও বিচার করা।দুই নম্বর দাবি হলো বিশ্ববিদ্যালয় ও গেরুয়া সংলগ্ন সংযোগ সড়কে স্থায়ী দেয়াল নির্মাণ করা।তিন নম্বর দাবি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল গুলো খুলে দেওয়া।


উল্ল্যেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস (জাবি) সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল সন্ধ্যায় মাইকিং করে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় তৎক্ষণাৎ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে দুই জন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।গুরুতর আহত দুজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন।তার মাথায় গুরুতর জখম হওয়ায় মাথায় ৫ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।আরেক জন শিক্ষার্থী হলেন ৪৫ তম আবর্তনের জোবায়ের এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৪ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এলেক্স।

এছাড়া অন্যান্য আহত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুব বলেন সেখানে তিনি প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে আনতে ঘটনাস্থলে যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হক বলেন,আমরা ঘটনা শুনেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কাছে থেকেও কোন সন্তোষজনক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।গতকালের গ্রামবাসীদের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় অসংখ্য শিক্ষার্থী আটক অবস্থায় অসহায় সময় পার করতে থাকে গেরুয়া এলাকায়। এদিকে আটকে পড়া শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে।

সন্ত্রাসীদের হামলা যেন পুনরায় না ঘটে তার জন্য তারা ফেইসবুকে পোস্ট করতে থাকে। এদিকে গেরুয়াতে আটকে পড়া সহপাঠী ও বন্ধুদের উদ্ধারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আসেপাশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা গেরুয়া সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয় গেইট এলাকায় সংঘবদ্ধ হতে শুরু করে। এদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হতে থাকে।গভির রাত পর্যন্ত চলে দু’পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি।

অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অসহায় ও আশ্রয়হীন শিক্ষার্থীদের সাভারের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে।করোনা ভাইরাসের কারণে গতবছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে।যে কারণে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসেপাশে অবস্থিত গেরুয়া, ইসলামনগর, আমবাগান এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকছেন।যে কারণে এলাকাবাসীদের সাথে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তবে গতকালের নির্মম ঘটনা অতিতের সকল ঘটনাকে অতিক্রম করে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।। এদিকে শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠনগুলো।”

আপনি আরও পড়তে পারেন