পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে ঢাকা জেলা। উপজেল গুলো হচ্ছে— দোহার,নবাবগঞ্জ,কেরানীগঞ্জ,সাভার ও ধামরাই। ঢাকা শহরটি কমকরে হলেও চারশ বছরের অধিক পুরুনো। সেই ঢাকা শহর হতে নবাবগঞ্জের দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিমি। যা রাস্তার আঁকাবাকা সর্পিলআকৃতির দৈর্ঘ্য। সোজা হিসেব করলে কমকরেও পাঁচ সাত কিমি দূরত্ব কমে যাবে। তথাপি নবাবগঞ্জ উপজেলা দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিলো বুড়িগঙ্গা,ধলেশ্বরী ও ইছামতি এই তিনটি নদীর কারণে। একটি সময় ছিলো যখন মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিলো নদীপথ। তখন নবাবগঞ্জ ছিলো খুবই প্রসিদ্ধ একটি অঞ্চল। পুরুনো জমিদারদের এক উল্লেখযোগ্য আবাসভূমি ছিলো নবাবগঞ্জে।
এখানে গড়ে ওঠেছিলো নগর সভ্যতা। তারই প্রধাণ অঞ্চল কলাকোপা। কলাকোপা গ্রামটি কয়েকটি নগরে বিভক্ত। যেমন-বড় নগড়,মধ্য নগড়,গোয়াল নগড় সহ রাজারামপুর,পোদ্দার রাজার ইত্যাদি অঞ্চলে। এসব জায়গায় গড়ে উঠে সুরম্য প্রসাদ ও জৌলুশপূর্ণ জমিদার বাড়ি। কলাকোপা-বান্দুরা বলতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এক নামে চেনে। যদিও নবাবগঞ্জ নামে ততটুকু চেনে বলে মনে হয়না। বিশেষত দোহার-নবাবগঞ্জ একত্রে যতটুকু পরিচিত। বান্দুরা অঞ্চলটিও সমৃদ্ধ এবং এখানে বহু খৃষ্টান সম্প্রদায়ের বাস। এ অঞ্চলটিও পুরুনো ঐতিহ্যের নিদর্শনে সমৃদ্ধ। ১৭৭৭ সালে এখানে নির্মান করা হয় ‘রানী জপমালার গীর্জা’।
বান্দুরা ছাড়াও গোল্লা,বক্সনগড়,তুইতাল,সোনাবাজু এসব অঞ্চলেও খৃষ্টান সম্প্রদায়ের বসতি এবং পুরুনো ঐতিহ্যবাহী গীর্জা কালের সাক্ষী হিসেবে এখনো দন্ডায়মান। অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ এই উপজেলাটি এখনো পিছিয়ে আছে গ্যাস সংযোগের কারণে। উপজেলাটি প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। প্রায় প্রতি পরিবারেই কেও না কেও প্রবাশে কর্মরত। প্রচুর রেমিটেন্স আসে এই অঞ্চলের মানুষের হাত দিয়ে। কিন্তু সঠিক অবকাঠামো ও গ্যাস সংযোগের অভাবে এখানে কোন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠছেনা। যদিও দেশের শীর্ষস্থানীয় ধনীদের বাস এই অঞ্চলে। নদীগুলোর উপর দীর্ঘদিন পূর্বেই ব্রীজ নির্মিত হওয়ায় এখন গ্যাস সংযোগ সহজ হওয়ার কথা। এ বিষয়ে সবার সচেতনতা কামনা করি। ছবিতে ঐতিহ্যবাহী কলাকোপার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিদর্শন।