সিরাজদিখানে আফজাল খান বিক্রমপুরী নামে এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রকে বলাৎকার করার অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার ১০ বছরের এক ছাত্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে প্রায় কয়েকশ এলাকাবাসী মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে ওই অধ্যক্ষকে মারধর শুরু করে। পরে বিচারের আশ্বাষ দিয়ে তাকে মাদ্রাসা থেকে ছাড়িয়ে নেন সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত মীর। অধ্যক্ষকে ছাড়িয়ে নিলেও তদন্তের নামে অভিযোগকারী ওই ছাত্রকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাদ্রাসাটির ভরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা হোজায়ফা ওই ছাত্রকে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। সাংবাদিকরা ওই ছাত্রের সাথে কথা বলতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাতে বাধা প্রদান করেন। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন ও উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সম্পাদক রনি চৌধুরী সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক এলাকাবাসী। তবে অধ্যক্ষ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর আগে সিরাজদিখান উপজেলার ছাতিয়ান তলী গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা মো ঃ হাবিবুল্লাহ খান তার ব্যক্তিগত অর্থে তৈরি দোতলা ভবনে দারুল উলুম ছাতিয়ানতলী মুহাম্মাদীয়া ক্বাওমী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যাক্তি মালিকানার মাদ্রাসা হওয়ায় এর কোন পরিচালনা কমিটিও করা হয়নি। নিজের ইচ্ছায় মাদ্রায়ার অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ দেন তারই ভাতিজা শ্রীনগর উপজেলার সোন্দার দিয়া গ্রামের আফজাল খান বিক্রমপুরীকে। অধ্যক্ষ হওয়ার সুযোগে আফজাল খান মাদ্রাসার প্রায় শতাধিক ছাত্রের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে একাধিক ছাত্রকে বলাৎকার করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। সর্বশেষ তিনদিন আগে সে ওই মাদ্রাসার ১০ বছরের এক ছাত্রকে বলাৎকার করে। পরে ওই ছাত্র আরেক শিক্ষককে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি জানতে পেরে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয় উঠে এবং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে অধ্যক্ষের বিচার দাবী করে ও তাকে শারীরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত মীর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিচারের আশ্বাষ দিয়ে আফজাল খানকে ছাড়িয়ে নেন। অপর একটি সূত্র জানায়, আফজাল খান জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে হেফাজত ইসলামের মামলা সহ অন্তত ৩ টি মামলা রয়েছে। তার চারিত্রিক সমস্যার কারনে দুবছর আগে তার স্ত্রী তাকে তালাক দেয়। তাদের সংসারে এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
বলাৎকারের বিষয়ে আফজাল খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন রকম বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে লিয়াকত মীরের সাথে কথা বলতে বলেন।
এব্যাপারে কোলা ইউপপি চেয়ারম্যান লিয়াকত মীর জানান, ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।