প্রশাসনের সহযোগিতায় শামীম ওসমান নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ করেছে : আইভী

প্রশাসনের সহযোগিতায় শামীম ওসমান নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ করেছে : আইভী

 

নারায়ণগঞ্জ শহরে হকার উচ্ছেদ ইস্যুতে সংঘর্ষের পর মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, প্রশাসনের সহযোগিতায় তিনি (শামীম ওসমান) নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ করেছেন। এই ডিসি-এসপির প্রত্যাহার চাই। যারা হকারের সমস্যা সমাধান করতে পারেন না। এই ডিসি এখানে বসে শুধু চাটুকারিতা করেন।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) রাতে আমি যখন এসপিকে ফোন করে বললাম একজন এমপি এভাবে অর্ডার দিলো, আপনি কী করতে চাচ্ছেন। উনি আমাকে বললেন একজন দলীয় এমপির নির্দেশ, আমি কী করবো। তখন আমি বললাম তাহলে আমি কি দলের বাইরের কেউ। তাহলে জনগণকে কি রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দেবেন না। হকার্স মার্কেট তো আমি করে দিয়েছি। প্রয়োজনে আরো করে দিবো। এই যদি হয় নারায়ণগঞ্জের ডিসি-এসপির অবস্থা। নারায়ণগঞ্জে এই ডিসি-এসপির থাকার অধিকার নেই।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শহরের চাষাঢ়া ও প্রেস ক্লাবের সামনে মেয়র আইভী ও এমপি শামীম ওসমান সমর্থকদের সংঘর্ষে মেয়র আইভী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের লোকজনের হাতে পিস্তল দেখা যায়।

এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ একাধিক ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। পরে এমপি শামীম ওসমান এসে হকারদের নিয়ে শহরের প্রেসক্লাব পর্যন্ত শোডাউন দেন।

আহত অন্যরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, তাপস সাহা, শিপন, যুবলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন সাজনু, হেলাল, ভাগ্নে জুয়েল। আহতদের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৭ দিন ধরে শহরের হকার উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। এর মধ্যে সোমবার বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় হকারদের আয়োজিত সভায় এমপি শামীম ওসমান এসে সহমত জানান। ওইসময় হকারদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নারায়ণগঞ্জের ডিসি, এসপি ও ব্যবসায়ী সংগঠন চেম্বারকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন এমপি শামীম ওসমান। এই আল্টিমেটামের নির্ধারিত সময়ে হকাররা চাষাঢ়ায় বিকেল ৪টায় অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে মেয়র আইভী তার লোকজন নিয়ে চাষাঢ়ার অদূরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের বিপরীতে সায়ম প্লাজার সামনে এসে অবস্থান নেন। এসময় শামীম ওসমান সমর্থকরা হকারদের নিয়ে মেয়র আইভী ও তার লোকজনদের ধাওয়া করে।

এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় মেয়র আইভী ও তার লোকজনের উপর হামলা করে মারধর করে। পরে আইভীর লোকজনও শামীম ওসমানের লোকজনের উপর হামলা করে মারধর করে। উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে প্রায় এক ঘণ্টা। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের কর্মীদের হাতে পিস্তল দেখা যায়। পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ উভয় দিকে একাধিক ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে।

ওই সময় শামীম ওসমান বলেন, আমি এর বিচার আল্লাহকে দিব। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। আমাদের প্রচুর লোকজনদের মেরে আহত করা হয়েছে। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নেই নাই।

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আহত ৩০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। যার মধ্যে ৫ থেকে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment