মাহবুবুর রহমান টিপু,বিশেষ প্রতিনিধি(ঢাকা):-
দোহার উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে বাড়ছে হাতুরে ডাক্তারদের সংখ্যা।প্রশাসনের নাগের ডগায় প্রকৃতপক্ষে চিকিৎসক না হয়ে বড় বড় ডিগ্রীধারী সাইনবোর্ড লাগিয়ে চিকিৎসক সেজে তারা দিব্যি দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা। সরেজমিনে দেখা যায় যে, উপজেলার মৌড়া,ধীৎপুর,ফুলতলা বাজার,নারিশা বাজার,মেঘুলা বাজার,সুতারপাড়া বাজার,দোহার বাজার,জয়পাড়া বাজার,কার্তিকপুর বাজার,বাংলাবাজারসহ আরোও ১০/১২টি বাজারে দিয়ে বসেছেন ফার্মেসীর দোকান আর সাইনবোর্ডে অথবা ভিজিটিং কাডের নামের সাাগে যোগ করে লিখছেন ডাক্তার।এদের অনেকেরই নেই বলার মত শিক্ষাগত যোগ্যতা।এদের মধ্যে কেউ কেউ ওষুধ বিষয়ক ২-১ টা কোর্স করেই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
খোঁজ নিয়ে আরো দেখা যায় যে হাতুরে চিকিৎসক ও চরাঞ্চলে কবিরাজদের দৌরাত দিন দিন বেড়েই চলছে। উপজেলার সহজ সরল নিরিহ গ্রামবাসীর চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় প্রতারিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।এদের ভুল চিকিৎসায় অনেক সময় রোগী মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।অপরদিকে দোহার উপজেলায় বিভিন্ন হাট-বাজারে একশ্রেনীর ভন্ড কবিরাজ ও ফকিররা মানুষের ধর্মীয় অন্ধ বিশ্বাসকে পুজি করে নিজেদের তৈরী করা ঔষধ দিয়ে ১০০/ গ্যারান্টি সহকারে গ্যাষ্টিক,আলসার,পেটের পীড়া,মেহ প্রমেহ,ডায়াবেটিকস,সর্দিকাশিঁ,বাত জ্বর,যৌন রোগসহ জটিল রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।আবার কোথাও কোথাও গান-বাজনা বাজিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন এরা।স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানান,এসব ভন্ডদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখেন নি বলে জানান সমকালকে।
গত ৭দিনের অনুসন্ধানে দোহার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।উপজেলার নতুন বাজার,বাংল বাজার ,বিলাশপুর, পাল মগঞ্জ বাজার,নারিশা বাজার,মেঘুলা বাজার,ধিৎপুর বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা গেছে হাতুরে চিকিৎসকদের।হাতুরে চিকিৎসকদের দোকানের সামনে বা চেম্বারে সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করতে বিশাল সাইনবোর্ডে নিজেদের নামের পাশে নানা উপাধি ও ডিগ্রী জুড়ে দিয়ে দিব্যি বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া ছাড়া কিভাবে এরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে এমন প্রশ্ন করলেই নতুন বাজার এলাকার ভুয়া ডাক্তার আজাদ বলেন,বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর এজেন্টরা চিকিৎসা নির্দেশিকা ও সহায়ক নামের কিছু বই পুস্তক দেন সেটিই পড়েই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন এরা। এ বিষয়ে জয়পাড়া মেডিকেল রোড এলাকায় একাধিক ঔষধ বিক্রেতার কাছে তার চিকিৎসা সেবা সনদ দেখতে চাইলে তারা দৈনিক আগামীর সময়কে জানান,বিষয়টি নিয়ে আমার একার তো ব্যাপার না,এ রকম ঘটনা উপজেলার সব ফার্মেসীর দোকানে ঘঠছে।এটা আসলে প্রতারনা নয়,আমাদের ব্যবসা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.জসিম উদ্দিন দৈনিক আগামীর সময়কে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, হাতুরে ডাক্তারের কাছে রোগীরা না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের স্বরনাপন্ন না হয়ে একশ্রেনীর রোগীরা ভুয়া ডাক্তারের কাছে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।আমি রোগীদের আহবান জানাচ্ছি এরা যেন বিভিন্ন ইউনিয়ন ভিত্তিক সেবা কেন্দ্রে যায় অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে।সরকারের পক্ষ থেকে বিনামুল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হইয়াছে।এ ছাড়াও রোগীদের মাধ্যমে কোন হাতুরে ডাক্তার কোন ধরনের প্রতারনা করে থাকলে তা অভিযোগ আকারে পেলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।