ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা- উপাচার্যের কঠিন হুশিয়ারি

ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা- উপাচার্যের কঠিন হুশিয়ারি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে নীপিড়ন করার অভিযোগ উঠেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আজিজুল হক শামীমের নামে ।

ছাত্রী নিপীড়নের  ঘটনায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা- উপাচার্যের কঠিন হুশিয়ারিআজ বেলা ১১টা ৩০ মিনিট নাগাত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এর ৩য় তলা থেকে ৪র্থ তলায় ঊঠার সময় ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা শান্তা এর সাথে অভিযুক্ত আজিজুল হক শামীম এর সিড়ি দিয়ে উঠা নামা নিয়ে তর্কাতর্কি হয় । তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ চলে যায় । পরবর্তিতে আজিজুল হক শামীম তার সাথে কয়েকজন নিয়ে ফোকলোর বিভাগে আসে এবং শান্তাকে ঢাকে । একপর্যায়ে শান্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও গায়ে হাত তোলেছে বলে জানান নির্যাতনের স্বীকার শান্তা ।

শান্তার সাথে থাকা কয়েকজন প্রতক্ষ্যদর্শী শিক্ষার্থী বলেন এই ঘটনা আমাদের মর্মাহত করেছে । আমরা এই ঘটনার বিচার চাই । নারী শিক্ষার্থীর উপর নিপীড়ন মানা হবে না এর বিচার করতে হবে ।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আজিজুল হক শামীম বলেন শান্তা নামের মেয়েটি আমাদের সাথে বেয়াদবি করেছে , আমি তাকে তার পরিচয় জানতে চেয়েছি কিন্তু তার গায়ে হাত তুলি নি । এটি মিথ্যাচার । তার সাথে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন আমাদের সামনে এমন ঘটনা ঘটতে দেখি নি । শামীমের নামে এটি মিথ্যাচার ।

এই ঘটনার প্রতিবাদে ফোকলোর বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করে ক্যম্পাসে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় । সেখানে তারা শ্লোগান দিতে থাকে এবং প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিপীড়নের স্বীকার শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা শান্তা, আফরিন আক্তার , নূরে হাবিবা , আছিয়া আক্তার । ফোকলোর বিভাগের শিক্ষকরাও তাদের দাবির সাথে এক হয়ে উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছে বিচারের ।

প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুঝাতে আসেন সহকারী প্রক্টর নজরুল ইসলাম । আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বুঝাতে না পেরে সহকারী প্রক্টর আবারো উপাচার্যের কক্ষে ফিরে যান । পরবর্তীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সাথে দেখা করেন এবং একটি স্মারকলিপি দেন । যেখানে তাদের ৪টি দাবির কথা তুলে ধরেন যার মধ্যে রয়েছে-

১। আজিজুল হক শামীম এর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ।

২। ৬ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে ।

৩। ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট জানাতে হবে ।

৪। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিচার করতে হবে ।

এই ঘটনায় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ. এইচ. এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন নিপীড়নের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমানিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে । এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়ন করবে আর শাস্তি হবে না তা হবে না । সুষ্ট তদন্ত করে দ্রুত সময়ে এর বিচার করা হবে ।

উল্লেখ্য আজিজুল হক শামীম সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন যে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে তা নিন্দনীয় । সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার করা হোক এটাই প্রত্যাশা । অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের কেউ কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আজিজুল হক শামীম বর্তমান ছাত্রলীগের কেউ নয় । তার দায়ভার ছাত্রলীগ নিবে না ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment