কুমিল্লায় বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক ৫

কুমিল্লায় বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক ৫

কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার ঘোষনগর এলাকায় মধ্যরাতে কলেজ ছাত্রের রুমে বিস্ফোরণের মূল কারণ দুই দিনেও জানা যায়নি। আলামতগুলো ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস এম মনির-উজ-জামান বিপিএম-পিপিএম। জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি মাথায় রেখেই তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এখন পর্যন্ত কলেজ ছাত্র রিয়াজুলসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নাজিরা বাজারসংলগ্ন ঘোষনগর এলাকার হলি কেয়ার স্কুলের সঙ্গে চারতলা বাসার নিচতলার একটি কক্ষে থাকতেন কুমিল্লা সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াজুল (১৭) ও তার খালাতো ভাই সোহাগ (১৪)। কলেজ ছাত্র রিয়াজুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার উলুকনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। বাড়ির মালিক তাদের নানা হাজী আবদুল জলিল পরিবার নিয়ে থাকতেন পাশের একটি ইউনিটে।

গত বুধবার রাত ২টার দিকে রিয়াজুলের কক্ষে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে রুমের থাই গ্লাসের জানালা ও স্টিলের দরজা ভেঙে যায়, রুমে থাকা কাপড়ে আগুন লেগে যায়। এ সময় বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়া ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আগুন নিভিয়ে কক্ষে থাকা রিয়াজুল ও সোহাগকে উদ্ধার করে। বিস্ফোরণে সোহাগ বেশি আহত না হলেও রিয়াজুলের দুই হাত ও মুখের বেশ কিছু অংশ ঝলসে যায়।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বুড়িচং থানা ও দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলটি ঘিরে রাখে। ওইদিন সন্ধ্যায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাতে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্ফোরণের আলামত সংগ্রহ করে। খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস এম মনির-উজ-জামান বিপিএম-পিপিএম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, আবদুল্লাহ-আল মামুন, ডিবির ওসি এ কে এম মনজুর আলম, বুড়িচং থানার ওসি মনোজ কুমার দে এবং কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বিপিএম সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে- তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে আহত রিয়াজুলের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরণের আলামত সংগ্রহ করে শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় নিয়ে গেছে।

এ ঘটনায় বুড়িচং থানার এসআই শাহাদাৎ হোসেন বাদী হয়ে রিয়াজুলকে এজাহার নামীয় আসামি করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে শুক্রবার বিকেলে বুড়িচং থানায় মামলা দায়ের করেন। সন্ধ্যায় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ড. এস এম মনির-উজ-জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। বিস্ফোরণের আলামত পরীক্ষা ও তদন্ত শেষে ঘটনার বিষয়টি জানা যাবে।

শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন আহত কলেজছাত্র রিয়াজুল, তার নানা হাজী আবদুল জলিল, মামা আলমগীর, ফুফাতো ভাই রায়হান ও খালাতো ভাই সোহাগ। রিয়াজুল কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment