ঝিনাইদহে ৮শ পরিবার চাষ করছে বাউকুল: ২ হাজার নারী পুরুষের কর্মসংস্থান

ঝিনাইদহে ৮শ পরিবার চাষ করছে বাউকুল: ২ হাজার নারী পুরুষের কর্মসংস্থান

রিয়াজ উদ্দীন (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের ৮শ পরিবার চাষ করছে বাউ কুলের। ২ হাজার নারী পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতিদিন ৩০ লাখ টাকার কুল বিক্রি হয়। কৃষি অফিসের সুত্র মতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাউ কুল চাষের গ্রাম এটি। স্থানীয়রা ভাটপাড়া গ্রামটিকে কুলের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত করেছে।

২০১১ সালের দিকে এই গ্রামের স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক তাজু উদ্দিন প্রথমে দেড় বিঘা জমিতে বাউ কুল চাষ করেন। সেই বছর তিনি কুল বিক্রি করে বেশ টাকা পান। এর পর কুল চাষে আগ্রহ বেড়ে যায তার। পরের বছর আরো ৪ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেন। এর পর তাজু উদ্দিনকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার দেখা দেখি শুরু হয় বাউ কুলের চাষ।

এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৪শ বিঘা জমিতে এখন কুল চাষ করা হচ্ছে। কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে অধিকাংশ চাষী। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার নারী-পুরুষ কাজ করছে এইসব বাগানে। বাউকুল চাষী লিটন জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি বাউকুল পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। ঢাকার পাইকারী ব্যবসায়ীরা বাগান থেকেই কুল ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এক বিঘা জমি থেকে ৯০ থেকে ১০০ কাটুন কুল সংগ্রহ করা যায়। প্রতি কাটুনে ৭০ কেজি হিসেবে ৬ হাজার ৬০০ থেকে ৭ হাজার কেজি বাউ কুল পাওয়া যায়। গড়ে ৩৫ টাকা দর হিসেবে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকার বাউ কুল বিক্রি করা যায়। বাউকুল চাষী সবুজ জানান, এক বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করতে খরচ হয় মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

মহেশপুর উপজেলার কৃষি অফিসার মো. আবু তালহা জানান, ২০১১ সালের দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের দ্বিতীয় শস্য বহুমুখি প্রকল্প (এসসিডিপি) আওতায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে গ্রাম্য চিকিৎসক তাজু উদ্দিন দেড় বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেন। বাউ কুল লাভজনক ফসল। অল্প সময়ে এটি চাষ করে বেশি লাভ করা যায়। কুলের পাশাপাশি এই জমিতে বোরো ধান, কলাই চাষ করা যায়।

তিনি জানান, এই গ্রামের বাউকুল চাষীদের কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। কারিগরি, রোগবালাই, কৃষক প্রশিক্ষণ, কুল প্যাকেজিংসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। বাউ কুল চাষীদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য একজন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মান্দারবাড়িয়া ব্লকে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কুল চাষের সাথে জড়িত।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment