সবার দৃষ্টি উচ্চ আদালতে

সবার দৃষ্টি উচ্চ আদালতে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন কিনা নির্ধারণ হবে আজ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তিনিসহ অন্য আসামিদের সাজার রায়ের নথি বিচারিক আদালত থেকে গতকালই পৌঁছেছে উচ্চ আদালতে। আজ দুপুরে জামিনের ওপর শুনানি শেষে আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে উচ্চ আদালতের। তাই সবার দৃষ্টি এখন উচ্চ আদালতের দিকেই। এ আদেশকে ঘিরে গতকাল থেকেই খালেদার ভাগ্যে কি আছে তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। সবার মনে প্রশ্ন  খালেদা জিয়া কি সত্যিই জামিন পাবেন, নাকি অন্যকোনো কারণে জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাবে। জামিন না পেলে তার দল বিএনপি কি করবে। দেশে কি কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে  এমন নানা আলোচনা পথেঘাটে, বাসাবাড়ি, অফিস ও চায়ের টেবিলে। জানা গেছে গতকালই এ আদেশ দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও মামলার রায়ের নথি সময়মতো না আসায় আদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশব্যাপী চলছে বিভিন্ন কর্মসূচি। খালেদা জিয়ার নির্দেশ মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের দিকেই হাঁটছে বিএনপি। কিন্তু আজ খালেদা জিয়ার জামিন না হলে আন্দোলনের গতি কোনদিকে যাবে তা কেউই বলতে পারছে না। তখন কি আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকবে নাকি সহিংস পথে যাবে এনিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের মানুষ। তবে বিএনপির  একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার জামিন না হলেও তারা কঠোর বা সহিংস আন্দোলনে যাবে না। বিএনপি নেতাদের একটি অংশ মনে করছে দলটির চেয়ারপারসন জেলে থাকলেও নির্বাচনে যাবে বিএনপি এবং নেতাদের ধারণা তখন খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের সহানুভূতি আদায় করা যাবে। তাতে বিএনপির পক্ষে তুলনামূলক বেশি ভোট আসবে। অর্থাৎ ক্ষমতা গঠন করতে সক্ষম হবে বিএনপি। আবার বিএনপির আরেকটি অংশ মনে করছে খালেদা জিয়া জেলে থাকলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা কাজ করবে তখন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবি হবে দলের। এই যখন অবস্থা তখন বেশিরভাগ বিএনপি নেতা আশা করছেন আজ সোমবারই হাইকোর্টে জামিন পাবেন খালেদা জিয়া। তাদের দৃঢ়বিশ্বাস হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দেবেন। পেয়ে যেতে পারেন স্থায়ী জামিনও। একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদও এই প্রত্যাশা করছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, দেশনেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি মিথ্যা। তাই তার জামিন আজ হবে বলেই তার বিশ্বাস। যতদিন পর্যন্ত তিনি মুক্ত না হবেন ততদিন পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চলবে বলে জানান জাহিদ। অপর একটি সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার জামিনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চায় না বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও। এমনকী আইনমন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে স্পষ্টই বলেছেন, খালেদা জিয়ার রায়ে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে তারা নির্বাচনি লড়াইয়ে দেখতে চাচ্ছেন। যদিও বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে যাচ্ছেন উল্টোটা। তারা বলছেন, সরকারের হস্তক্ষেপেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের জেল হয়েছে এবং সরকার চাচ্ছে খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেই নির্বাচন করতে। উল্লেখ্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশিবাজার বিশেষ আদালত খালেদা জিয়ার ৫ বছরের জেল এবং একই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের ১০ বছরের জেল হওয়ার পর খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment