নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ১৩ চিকিৎসককে নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। শনবিার দুপুরে ঢামেকের প্রশাসনিক ব্লকের সভাকক্ষে এ বোর্ড গঠনের পর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্তলাল সেনকে প্রধান করে এ বোর্ড গঠিত হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন, আজকে (শুক্রবার) নেপাল থেকে আহত তিনজনের কারো বার্ন তেমন নেই। তবে তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত রয়েছে। এছাড়াও ধোয়া থেকে ইনহেলেশন হয়েছে। তাই তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নয়। তবে তাদের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হবে। এছাড়াও তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। পরে তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩৩ মিনিটে বিজি-০০৭২ ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পরে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের সময় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
এরও আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৪৮ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি০০৭২ ফ্লাইটতে দেশে নিয়ে আসা হয়েছিল দুঘর্টনায় আহত হওয়া শাহরিন আহমেদকে। পরে তাকে বিকেল ৫টার দিকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে ড্রেসিং শেষে রাত ৮টার দিকে তাকে হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, নেপাল থেকে আসা আহতদের চিকিৎসার সার্বিক ব্যবস্থা তদারকি করতে ঢামেক হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
শুক্রবার হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন শাহরিনকে দেখেন এবং তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আমি নিজেই যেতে চাইনি, কিন্তু রোগীর খোঁজখবর ও চিকিৎসা ব্যবস্থা তদারকি করতে আমার যেতে হয়েছে। কিন্তু অন্য সবাইকে বলব প্লেন দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের দেখতে বার্ন ইউনিটে ভিড় জমাবেন না। এতে করে যেমন রোগী ও স্বজনরা বিব্রত হচ্ছেন তেমনি তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাও বাধাগ্রস্ত হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশী। কাঠমান্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া বাকি ১০ বাংলাদেশীর মধ্যে স্কুল শিক্ষক শাহরিনই প্রথম দেশে ফেরেন। এছাড়া মেহেদি হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা এবং আলিমুন্নাহার এ্যানিকে দেশে আনা হয়েছে।