জগন্নাথপুরে বেরী বাধেঁর কাজে অনিয়ম ও কৃষকের ফসলের ক্ষতি করার অভিযোগ

জগন্নাথপুরে বেরী বাধেঁর কাজে অনিয়ম ও কৃষকের ফসলের ক্ষতি করার অভিযোগ

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:-
সুনামগঞ্জে জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নে জালালপুর পুরান আলাগদী হাওর রক্ষা বেড়িবাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়ীত্তে থাকা পিআইসি কমিটির সভাপতি সুরুজ্জান ও সদস্য সচিব তমিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কাজে অনিয়ম ও কৃষকের ফসলের ক্ষতি করে বাঁধে মাটিতোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কৃষকের বোরোধান ও সবজি বিনিষ্ট করে এবং তাদের জমি দুই থেকে তিন ফুট গভীর করে বাঁধের নিকট থেকে মাটিতোলার কারনে চাষাবাদের জমি চাষের অনুপযোগী হওয়ায় পিআইসি কমিটির বিরুদ্ধে জালালপুর গ্রামের কৃষক আবদুল্লাহ,আব্দুল হামিদ ও আতাউর রাহমান স্বাক্ষরিত দরখাস্ত জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে গত বুধবার (২১ মার্চ) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন হাওর রক্ষা বেড়ি বাঁধ নির্মাণ কাজে জালালপুর ও পুরান আলাগদি গ্রামের কৃষকরা ভুমি প্রদান করেন।

কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই বাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। তবে বেড়ি বাঁধের কাছ থেকে কৃষকের রোপনকৃত ধান ও সবজি বিনিষ্ট না করে মাটিতোলতে পিআইসি কমিটিকে বারন করা হয়। কিন্ত পিআইসি জোরপূর্বক কৃষকের ফসল নষ্ট করে এমনকি তাদের জমি থেকে দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত গভীর করে মাটিতোলে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এর প্রতিবাদ করলে কৃষকদের মামলার ভয় দেখানো হয় বলেও দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও বেড়ি বাঁধ নির্মাণ কাজ বর্ধিত মেয়াদে অদ্যাবধি শেষ করতে না পারায় এই পিআইসি কমিটির উপর এলাকার কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
কাজের ব্যাপারে গোতগাঁও গ্রামের যুবলীগ নেতা আব্দুল বারিক বলেন, জালালপুর ও পুরান আলাগদি বেড়িবাঁধের পিআইসি সচিব তমিজ উদ্দিনের বাড়ি ছৈদপুর, সে প্রকৃত কৃষক নয়, কিভাবে সে কমিটির সচিব হয় এটা প্রশ্নবিদ্ধ। বাঁধের টাকা লোপাট করতে তারে কৌশলে পিআইসি কমিটিতে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত বছর পুরান আলাগদি ও জালালপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ও পূর্ব বড় ভাকৈর ইউনিয়নের হাওরে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবেশ করে বোরোধান তলিয়ে যায়। এ ছাড়াও এসব এলাকার আবাদি জমিতে দীর্ঘ মেয়াদি সময় পানি থাকায় অগ্রাহায়নের আমনধান চাষআবাদ ব্যাহত হয়। বছর বছর নদীর পানি প্রবেশ করায় বোরোধান চাষাবাদের জমি পলিমাটিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
গত বছর পূর্বজালালপুর ( ভাঙ্গা বাড়ি), কুশিয়ারা মোহনা, কদমতলা,পুরান আলাগদি ও জালালপুর গ্রামে বেড়ি বাঁধ ভাঙ্গনের শিকার হয়। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ সমূহের মধ্যে জালালপুর ও পুরান আলাগদি,মধিপুর,গঙ্গানগর, মশাজানের বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি।পাইলগাঁও ইউনিয়নে বর্ধিত মেয়াদের পরও বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ও অনিয়মের প্রতিবাদে গত ১৮ মার্চ পাইলগাঁও ইউনিয়নের সচেতন কৃষক সমাজ মানববন্ধন করেছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জালালপুরের পিআইসি সদস সচিব তমিজ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কাজে অনিয়ম ও কৃষকের ফসলের ক্ষতি করে বাঁধে মাটিতোলার এটা সম্পুর্ণ মিথ্যা। আমরা এটা মনগড়া ভাবে অপপ্রচার চালালো হচ্ছে। আমি পাইলগাঁও ইউনিয়ন জাতিয় শ্রমিকলীগের সভাপতি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment