ঢাকা মহাসড়ক ধূলার দখলে.!

ঢাকা মহাসড়ক ধূলার দখলে.!

ফরমান শেখ, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বেশিরভাগ অংশই দেখে চেনার উপায় নেই এটি মহাসড়ক নাকি গ্রামীণ সড়ক। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের উপ-শহর এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০কি.মি. সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ওই নির্মাণ কাজের জন্য মহাসড়কটি ধূলার দখলে চলে গেছে।

মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ক্যাডেট কলেজ থেকে এলেঙ্গা পর্যন্তÍ চার লেনে উন্নীত করণের কাজ চলমান থাকায় বিভিন্ন স্থানে ধূলার সৃষ্টি হয়েছে। ধূলার কারণে মহাসড়কে ঝুঁকিতে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে এ মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রী সাধারণ চরম বিপাকে পড়ছে।

মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে নামমাত্র পানি দিয়ে ভিজিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য ধূলা নিবারণ করলেও সেটা কোনো কাজেই আসছে না। এছাড়া প্রতিনিয়ত মহাসড়কে যানবাহন বিকল হওয়াসহ দুর্ঘটনা ঘটছে। চারপাশে সমানে উড়ছে ধূলোবালি। মহাসড়কের আশপাশের ঘর-বাড়ি, দোকান-গাছপালাও এখন ধূলায় ছেয়ে গেছে। সড়কটি দিয়ে চলাচলের সময় ধূলার তান্ডবে কিছুই দেখা যায় না। এমনকি যানবাগন চালক ও যাত্রী সাধারণের নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। মহাসড়ক সংলগ্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা ও মসজিদে নামাজ আদায় করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ চলাচল করছে নাকে কাপড় গুঁজে, কেউ লাগিয়েছেন মাস্ক। দোকানিরা কিছুক্ষণ পর পর পানি ছিটাচ্ছেন। তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। সড়কের পাশে বসবাসকারী ও ব্যবসায়ীরা জানান, এ সমস্যা আজকের নয়। টানা দুই বছর ধরে চলছে। মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ শুরু করা হলেও তা চলছে ধীর গতিতে। ফলে সড়কের পাশে থাকা দোকানি ও বাড়ির মানুষরা নানা সমস্যায় ভূগছেন। সড়কের পাশের বেশির ভাগ পরিবারের সদস্যরা শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে আসা বিনিময় পরিবহনের সুপারভাইজার আলম হোসেন, পিকআপ ভ্যানের চালক চঞ্চল মিয়া, পাথরভর্তি ট্রাকের চালক আল আমিন জানান, সামনে থাকা যানবাহন চলে গেলে পেছনের যানবাহনের চালক ধীর গতিতে যানবাহন চালিয়ে থাকে। এতে সময় বেশি লাগছে। তাছাড়া ধূলার কারণে সামনে প্রায় ২৫-৩০গজ কিছুই দেখা যায় না। এতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য পর্যাপ্ত পানি দেয়া হলে ধূলা উড়বে না বলে তারা জানান।

পথচারী ও যাত্রীরা জানান, এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা এখন চরম দুর্ভোগের। অসুস্থ কোনো মানুষ এ সড়কে চলাচল করলে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সড়ক দিয়ে বড় ধরনের কোনো যানবাহন গেলে ধূলায় চারিদিক অন্ধকার হয়ে যায়। তাছাড়া যানবাহন চলার সময় ছোট-বড় গর্তের ঝাঁকুনিতেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ধূলাবালির কারণে সাধরণত ফুসফুসের বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে পারে। এছাড়া এলার্জি জনিত ঠান্ডা, কাঁশি, চোখের সমস্যাও হতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে মাস্ক ও সানগ্লাস ব্যবহার করা জরুরি। তাছাড়া বাসায় ফিরে নিজেকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণের প্রকল্প পরিচালক জিকরুল হাসান জানান, চার লেন উন্নীতকরণ কাজ চলমান থাকায় কিছুটা ভোগান্তি হয়। তবে, দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment