নির্বাচনে আজীবন নিষিদ্ধ নওয়াজ শরিফ

নির্বাচনে আজীবন নিষিদ্ধ নওয়াজ শরিফ

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন এক রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। দুর্নীতির দায়ে ক্ষমতাচ্যুত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে রাষ্ট্রীয় পদে আজীবন অযোগ্য ঘোষণা করেছেন দেশটির শীর্ষ আদালত।

পাকিস্তানের ডন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় দিয়ে নওয়াজের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ নিয়ে সৃষ্ট অস্পষ্টতা দূর করেন। বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়াল রায় পড়ে শোনান।

গত বছর ২৮ জুলাই পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি মামলার পাকিস্তানের হাইকোর্ট সংবিধানের ৬২ ধারা অনুযায়ী নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদে অযোগ্য ঘোষণা করেন।এরপর পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-এন) প্রধানের পদেও অযোগ্য হন। এরপরই নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের ( পিএমএল-এন) অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয় নওয়াজ শরিফের ভাই পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে। কিন্তু সেই সময় যেটা স্পষ্ট হয়নি, তা হলো- কত দিনের জন্য বরখাস্ত হতে হলো ৬৭ বছর বয়সী শরিফকে। তা কি সাময়িক নাকি সারা জীবনের জন্য? পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়ে সেই ধোঁয়াশা একেবারেই কেটে গেল।

পাকিস্তান সংবিধানের ধারা ৬২(১) (এফ) অনুযায়ী, দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য হওয়ার পূর্ব শর্ত হলো ব্যক্তিকে ‘সাদিক ও আমিন’ (সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ) হতে হবে।  একই ধারায় গত ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা জাহাঙ্গির তারিনকে অযোগ্য ঘোষণা করে পাকিস্তান হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই দুই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ১৭টি আপিল ও পিটিশন জমা পড়ে বলে।

তাই প্রশ্ন উঠে, পার্লামেন্ট সদস্য বা সরকারি পদে থাকা কোনো ব্যক্তি সংবিধানের ৬২ ধারা অনুযায়ী নিষিদ্ধ হলে তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আজীবন নাকি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।

শুক্রবারের এই রায় ওইসব প্রশ্নের অবসান ঘটিয়েছে। অর্থাৎ নওয়াজ এবং পিটিআই নেতা জাহাঙ্গির আর কখনও কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল রায়ে বলেন, ভবিষ্যতে ৬২(১) (এফ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও পার্লামেন্ট সদস্য কিংবা সরকারি চাকরিজীবীকে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তা স্থায়ী বলে বিবেচনা করা হবে। এসব ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না কিংবা পার্লামেন্ট সদস্য হতে পারবেন না।

বেঞ্চের নেতৃত্ব প্রধানকারী পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার বলেন, ‘জনগণ সৎ চরিত্রের নেতা পাওয়ার দাবিদার।’

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment