স্টাফ রিপোর্টার, টঙ্গী :
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আমাদের মাঝে কোন দলীয় বিভেদ বা কোন্দল নেই। এডভোকেট আজমত উল্লা খান আমার বড় ভাই। মেয়র পদে আমি প্রার্থী হলেও আজমত উল্লা খানই সিটির নির্বাচন পরিচালনা করছেন। তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীক আমাদের সবার। স্বাধীনতার পক্ষের জনগণ অবশ্যই আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে গাসিক নির্বাচনে আমাকে তথা আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করবে। ইনশাআল্লাহ।
গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুরের ছয়দানা মালেকের বাড়ি এলাকায় তার বাসভবনে এক উঠান বৈঠকে সাংবাদিকের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে মেয়র হওয়াই আমার টার্গেট। আপনাদের সহযোগিতায় আমি সিটি করপোরেশনের মেয়র হতে পারলে গাজীপুর সিটিকে গ্রীণ সিটিতে পরিণত করবো।
নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি একজন এডভোকেট। আইনের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধা দেখিয়ে এবং নির্বাচন কমিশনের নিয়মানুযায়ীই চলার চেষ্টা করি। এর মধ্যে অনিচ্ছাকৃতভাবে আমি অথবা আমার নেতাকর্মীদের দ্বারা দু’একটি ভুলত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। তবে নির্বাচন আচরণবিধি মেনেই আমি প্রতীক পাওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি একজন প্রবীন রাজনীতিবিদ। তাকে আমি শ্রদ্ধা করি। সিটি নির্বাচনে তিনি আমার কোন সহযোগিতা চাইলে আমি ওনাকে সার্বিক সহযোগিতা করবো। তিনি বলেন, হাসান উদ্দিন সরকার যদি আমার সাথে একই মঞ্চে বক্তব্য দিতে চান তাহলেও আমি তাকে স্বাগত জানাব।
আগামী নির্বাচনে সিটি মেয়র নির্বাচিত হলে স্থানীয় সাংবাদিকদের স্বল্পমূল্যে আবাসন, ছেলে মেয়েদের ফ্রি লেখাপড়ার ব্যবস্থাসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা প্রদানের অঙ্গীকার করেন।
আমি মেয়র নির্বাচিত হতে পারলে গাজীপুরের ৫৭টি ওয়ার্ডকে ৮টি অর্থনৈতিক জোনে বিভক্ত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে আধুনিক গ্রন্থাগার স্থাপন, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি চালু করা হবে। এছাড়া ওয়ার্ড ভিত্তিক কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার লক্ষ্যে বর্জ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা এবং নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
এলাকাবাসীর জান ও মালের নিরাপত্তার স্বার্থে সড়কের গুরুত্বপূর্ণস্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামের স্থাপন, তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের সকল নাগরিকের জন্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকারদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা, অঞ্চল ভিত্তিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন, মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, গুরুত্বপূর্ণস্থানে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই জোন তৈরি, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক উন্নয়ণ কমিটি গঠন করা, সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও সবুজায়ন করার জন্য ফাঁকাস্থানে বৃক্ষরোপন করা হবে।
এসময় তার সাথে ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান।
অপরদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার শনিবার সকালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাতকার দেন। সকাল ১০টায় নিজ বাস ভবনের আঙ্গিনায় যুবদলের ও বিকেলে মহিলাদলের নির্বাচনী প্রচারণার প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা সভায় নেতাকর্মীদের দিক নির্দেশনা দেন তিনি। যুবদলের প্রস্তুতি সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সুরুজ আহমেদ, রফিকুল আজিজ প্রিন্স প্রমুখ।
মহিলাদলের প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন, মহিলাদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলাদলের সভানেত্রী পেয়ারা মোস্তফা, সহসভাপতি মেহেরুন্নেছা, সাধারণ সম্পাদক আমেনা খাতুন, যুগ্নসম্পাদক সপ্না আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভানেত্রী রাজিয়া আলী, সাধারণ সম্পাদক সামছুন্নাহার ভূইয়া, গাজীপুর জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক গোলনাহার, গাজীপুর মহানগর মহিলাদলের সভানেত্রী শিরিন চাকলাদার, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজা আক্তার, উপদেষ্টা আনোয়ারা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক বীনা চৌধুরী প্রমুখ।